এই সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, আর ভারতের পক্ষ থেকে অংশ নেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সম্মেলনের সাইডলাইনে তাদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত বলে জানিয়েছে দায়িত্বশীল সূত্র।
সুনির্দিষ্ট বৈঠকের সময় এখনও নির্ধারিত না হলেও, সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত এই সম্মেলনের জন্য ওমান ভেন্যু স্পন্সর করছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এরই মধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সম্মেলনে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং একান্ত বৈঠকেরও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
সূত্র অনুযায়ী, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর এটি হবে হোসেন ও জয়শঙ্করের দ্বিতীয় বৈঠক। তাদের প্রথম বৈঠক হয়েছিল নিউ ইয়র্কে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠকের সাইডলাইনে। সেই বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ডিসেম্বরে ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি ঢাকা সফর করেন।
বিক্রম মিশ্রির সফর ছিল সংক্ষিপ্ত, কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ। ১২ ঘণ্টারও কম সময়ের এই সফরে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে একান্ত আলোচনা করেন। সফর শেষে দিল্লিতে ফিরে তিনি ভারতীয় পার্লামেন্ট কমিটিতে বক্তব্য দেন, যা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বর্তমান পরিস্থিতির প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তবে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা চললেও, আগরতলার সহকারী হাইকমিশনে উগ্রবাদী হামলা, বাংলাদেশের পতাকা পোড়ানো এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। শেখ হাসিনা বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থান করছেন এবং সেখান থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে চলেছেন। তার সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর ঢাকায় আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক কেন্দ্র ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ও দলটির আত্মগোপনে থাকা নেতাদের সম্পত্তিতে ছাত্রদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
এরপর, ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে বাংলাদেশ সরকার। পাল্টা জবাবে ৭ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে ভারত সরকার এবং আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়। বাংলাদেশ সরকার এটিকে ‘অপ্রত্যাশিত’ হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছে।
উভয় দেশের কূটনৈতিক সূত্রের মতে, মাস্কাট বৈঠকে সম্পর্কের চলমান অস্বস্তিকর পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে এবং উত্তেজনা নিরসনের উপায় খোঁজা হবে।
thebgbd.com/AR