ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বাচ্চাদের সময় দেওয়া যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ

বাচ্চাদের সময় দেওয়া শুধু ভালোবাসার প্রকাশ নয়, এটি তাদের মানসিক, আবেগিক এবং সামাজিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • | ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
বাচ্চাদের সময় দেওয়া যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ বাচ্চাদের সময় দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ

বাচ্চাদের সময় দেওয়া শুধু ভালোবাসার প্রকাশ নয়, এটি তাদের মানসিক, আবেগিক এবং সামাজিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারই শিশুদের প্রথম শিক্ষা কেন্দ্র, এবং বাবা-মায়ের সঙ্গে কাটানো সময় তাদের ব্যক্তিত্ব ও চিন্তাভাবনায় গভীর প্রভাব ফেলে।


শিশুরা যখন বাবা-মায়ের সঙ্গে বেশি সময় কাটায়, তখন তারা নিরাপত্তা অনুভব করে। এই নিরাপত্তাবোধ তাদের আত্মবিশ্বাসী করে তোলে এবং ভবিষ্যতে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শক্তি জোগায়। বিশেষ করে ছোটবেলায় বাবা-মায়ের সান্নিধ্য শিশুর মানসিক বিকাশকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা এবং সামাজিক দক্ষতা গঠনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।


একসঙ্গে সময় কাটানো শিশুরা পরিবারকে ঘিরে ভালো মূল্যবোধ শেখে। তারা নৈতিকতা, সহমর্মিতা এবং শৃঙ্খলার শিক্ষা পায়, যা ভবিষ্যতে তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করে। গল্প বলা, খেলা করা বা একসঙ্গে খাবার খাওয়ার মতো সাধারণ কাজও শিশুর মনে গভীর দাগ কাটতে পারে এবং তাদের জীবনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে সাহায্য করে।


বাচ্চারা বাবা-মায়ের কাছ থেকে শেখে কিভাবে কথা বলতে হয়, কিভাবে অনুভূতি প্রকাশ করতে হয় এবং কিভাবে সম্পর্ক বজায় রাখতে হয়। নিয়মিত সময় না দিলে তারা একাকিত্ব বা অবহেলার অনুভূতি নিয়ে বেড়ে উঠতে পারে, যা ভবিষ্যতে তাদের সামাজিক দক্ষতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।


বর্তমান ব্যস্ত জীবনে অনেক বাবা-মা ভাবেন যে ভালো খাবার, দামি খেলনা বা আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়াই যথেষ্ট। কিন্তু শিশুরা সবচেয়ে বেশি চায় বাবা-মায়ের মনোযোগ এবং ভালোবাসা। বাবা-মায়ের সঙ্গে সুন্দর মুহূর্তগুলো তাদের জীবনের স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে, যা বড় হয়ে তাদের মধ্যে ভালোবাসা ও পারিবারিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।


শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বাবা-মায়ের সময় দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। নিয়মিত আলাপচারিতা, একসঙ্গে খেলা বা তাদের অনুভূতি শোনা—এই ছোট ছোট বিষয়গুলো তাদের হতাশা, ভয় বা উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। এতে তারা ভবিষ্যতে মানসিকভাবে সুস্থ ও সুখী একজন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।


একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হলে শুধু পড়াশোনার চাপ না দিয়ে সন্তানদের সঙ্গে মানসম্মত সময় কাটানো দরকার। তারা যেন নিজের কথা নির্ভয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারে, সেজন্য এক উষ্ণ, ভালোবাসায় ভরা পরিবেশ তৈরি করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।