ঢাকা | বঙ্গাব্দ

স্পোর্টস ইন্সটিটিউট নিয়ে কাজ করছে সরকার, যেখানে হবে অ্যাডভান্স লেভেলের ট্রেনিং: ক্রীড়া উপদেষ্টা

ক্রীড়াঙ্গনের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্রীড়া ‍উপদেষ্টা বলেন, ছয় মাসেই অনেক কিছুর রেজাল্ট নিয়ে আসা সম্ভব নয়। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
স্পোর্টস ইন্সটিটিউট নিয়ে কাজ করছে সরকার, যেখানে হবে অ্যাডভান্স লেভেলের ট্রেনিং: ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরে, ৮ আগস্ট অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের হাতে ওঠে বাংলাদেশের শাসনভার। নতুন মন্ত্রীসভায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।


যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা হিসেবে তার মেয়াদকালের ছয় মাস পার করেছে। খুব কাছ থেকে দেখেছেন বাংলাদেশে ক্রীড়াঙ্গনের অনেককিছুই। নিজ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম ও ক্রীড়াঙ্গনের সামগ্রিক ভাবনা নিয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ একটি গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।


ক্রীড়াঙ্গনের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্রীড়া ‍উপদেষ্টা বলেন, ছয় মাসেই অনেক কিছুর রেজাল্ট নিয়ে আসা সম্ভব নয়। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। ক্রীড়াঙ্গনের টেকসই উন্নয়নের জন্য স্পোর্টস ইন্সটিউটিট নিয়ে আমরা কাজ করছি। যেখানে অ্যাডভান্স লেভেলের ট্রেনিং হবে এবং এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রীড়াবিদরা আরও বেশি সাফল্য পাবে।


তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ১৬ ফেডারেশনের কমিটি হয়েছে সেখানে সম্পূর্ণভাবে ক্রীড়াঙ্গনের ব্যক্তিবর্গ এবং ক্রীড়ানুরাগী যারা ক্রীড়াঙ্গনকে সহায়তা (পৃষ্ঠপোষক) করতে পারেন, তাদেরকে রাখা হয়েছে। আমরা সাবেক খেলোয়াড়, কোচ ও প্রকৃত সংগঠকদের প্রাধান্য দিয়ে ক্রীড়ার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।


সাফ অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন, পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয়, সাফ নারী চ্যাম্পিয়নের মতো সাফল্যও এসেছে এই সময়ের মধ্যেই বলে তিনি জানান।


বিপিএল নিয়ে এই উপদেষ্টা বলেন, এবারের বিপিএল অন্য যেকেনো আসরের চেয়ে ভালো। দর্শকরা রান দেখতে চায়। সেই হিসেবে এবার সর্বোচ্চ রান হয়েছে। দর্শকরা খেলার প্রাণ। স্টেডিয়ামে দর্শক উপস্থিতির সংখ্যাও হয়েছে সর্বোচ্চ। গত চার বিপিএলে যা টিকিট বিক্রি হয়েছে, এবার এক বিপিএলেই সেটা হয়েছে। তবে বিপিএলে আরও উন্নয়ন সম্ভব।


ফুটবলে জনপ্রিয়তা পুনরুদ্ধারের জন্য বাফুফেকে দেওয়া চট্টগ্রাম স্টেডিয়াম (এমএ আজিজ) ও নীলফামারীতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


সম্প্রতি দেশের দুই অন্যতম সেরা অ্যাথলেট রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী উন্নত জীবনের জন্য আমেরিকায় যাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, আর্থ-সামাজিক বাস্তবতার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। আমেরিকার পার ক্যাপিটা ইনকাম বা জীবনযাত্রার যে মান, সেটা তো আমরা দিতে পারব না। এখানেও দেশপ্রেমিক হওয়ার একটি বিষয় থাকে। এরপরও যারা সফল ও সম্ভাবনাময় ক্রীড়াবিদ আছে, তাদের আমরা বিশেষ নজর বা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব যাতে সামনে এমনটা না হয়।


ক্রীড়াঙ্গন সংস্কারের জন্য সার্চ কমিটি গঠনের বিষয়ে সার্চ কমিটির কাজ একটু ভিন্ন বলে তিনি মনে করেন।


ক্রীড়াঙ্গনে গতিশীলতা আনয়নে খোদ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সংস্কার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ক্রীড়া উন্নয়নের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ স্পোর্টস ভিলেজের ভাবনা রয়েছে। এজন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কিছু সম্পদ বেদখল হয়ে আছে, সেগুলো উদ্ধার করে খেলার জন্য মাঠ করা হবে। এনএসসির সক্ষমতা বৃদ্ধি হলে ক্রীড়াঙ্গনের সামগ্রিক উন্নয়ন, ফেডারেশনগুলোর দুর্বলতা কাটানো ও ক্রীড়াঙ্গনে আরও বেশি সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে মনে করি।


নারী ফুটবলে কোচ-খেলোয়াড় দ্বন্দ্ব আগে অচলাবস্থা নিরসনে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, এমন পরিস্থিতি অবশ্যই দুঃখজনক। খেলাধুলা তো আমাদের শৃঙ্খলা শেখায়। এই বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব ফেডারেশনেরই। ফেডারেশন বিষয়টি দেখছে, তারা ব্যর্থ হলে তখন আমরা দেখব।


বছরের মাঝামাঝিতে জাতীয় নির্বাচনের সময় ক্রীড়াঙ্গনের অগ্রগতিতে নিয়ে বলেন, আমরা স্বল্প সময়ের মধ্যে টেক অ্যান্ড অ্যাকশনের চেয়ে নীতিমালা বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। ব্যক্তি নয়, সিস্টেমের পরিবর্তন প্রয়োজন। এটা আগেও বলেছি। ক্রীড়াঙ্গনে সুষ্ঠু একটি নির্দেশনা বা নীতি থাকলে এবং সেটার বাস্তবায়ন হলে উন্নয়ন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। পরবর্তীতে যারাই দায়িত্বে আসুক তারা যদি এটা অন্তত অনুসরণ করে, তাহলে ক্রীড়াঙ্গনে বিগত সমস্যাগুলো (নীতি-নির্ধারণী) অন্তত থাকবে না।


thebgbd.com/NIT