জার্মানিতে রাজনৈতিক পালাবদল। সে দেশের মধ্য-বামপন্থী দল সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসডিপি)-কে হারিয়ে ক্ষমতায় আসতে চলেছে রক্ষণশীল দলগুলির জোট। চ্যান্সেলর হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন খ্রিস্টান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) দলের ফ্রেডরিখ মার্জ। নির্বাচনে মার্জের দল এবং খ্রিস্টান সোশ্যাল ইউনিয়ন জোট করে। দুই দল মিলিয়ে ২৮ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছে বলে জানিয়েছে জার্মানির সংবাদমাধ্যম এআরডি।
জার্মানির সাধারণ নির্বাচনে ‘অভাবনীয়’ সাফল্য পেয়েছেন অতি দক্ষিণপন্থী দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি)-ও। তারা ২০ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। আর বিদায়ী চ্যান্সেলর ওলাফ শুলৎসের দল এসডিপি মাত্র ১৬ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই দল কখনও এত খারাপ ফল করেনি। ভোটে বিপর্যয়ের ইঙ্গিত পেতেই পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন শুলৎস। বলেছেন, ‘দলের জন্য এটা শুধু খারাপ ফলই নয়, পরাজয়ও বটে।’
জার্মান ভোটের সম্ভাব্য ফল প্রকাশ্যে আসতেই এই বিষয়ে মুখ খোলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি শুলৎম এবং তার দলের সমালোচনা করে বলেন, ‘যে সরকারের কোনও সাধারণ বুদ্ধি নেই, জার্মানির মানুষ তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। জার্মানির জন্য এটা দারুন একটা দিন।’ জার্মানির এই ভোটে অতি দক্ষিণপন্থী দল এএফডি-কে সমর্থন করেন ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ ইলন মাস্ক। বর্তমান রাজনৈতিক সমীকরণ অনুযায়ী, কোনও দলই একক ভাবে জার্মানিতে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে রক্ষণশীলেরা অতি দক্ষিণপন্থীদের সঙ্গে হাত মেলাবেন কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে সে দেশে।
ভোটের আগে জার্মানির বিজ্ঞজনদের একাংশ অতি দক্ষিণপন্থী দলের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেন। অনেকেই অ্যাডলফ হিটলারের আমলকে স্মরণ করে দিয়ে এই ধরনের দলের সংস্রব এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তারপরেও সে দলের রাজনৈতিক সাফল্য জার্মানিতে রাজনৈতিক বদলের দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে মনে করছেন অনেকে।
যত দিন না নতুন জোট সরকার ক্ষমতায় আসছে, তত দিন চ্যান্সেলর পদে থাকবেন শুলৎসই। নতুন চ্যান্সেলর ইউরোপের সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী দেশের অর্থনীতি কী ভাবে সামাল দেন, অভিবাসন নিয়ে কড়া নীতির পথে হাঁটেন কি না, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটন-বার্লিনের সম্পর্ক কী হয়, এই সব দিকেই নজর সকলের। তবে ইউক্রেনের কপাল যে আরেকটু পুড়লো, সেটি নিশ্চিত হয়ে গেছে।
সূত্র: রয়টার্স
এসজেড