টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে শিক্ষা সফরে রওনা দেওয়া চারটি বাসে ডাকাতির ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ডাকাতরা গজারি গাছ ফেলে বাসগুলো আটকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার লুট করে। এ সময় ৩ জন ছাত্রী যৌন হেনস্থার শিকার হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় গ্রামবাসীরা রাতভর পাহারার ব্যবস্থা করেছেন। উপজেলার মালিরচালা এলাকায় কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গ্রামবাসী সারারাত পাহারা দিচ্ছেন।
গত মঙ্গলবার ভোররাতে উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের মালিরচালা এলাকায় এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সোয়াইতপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাসগুলো আটকিয়ে মুখোশধারী ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে লুটপাট চালায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষক ওবায়দুল ইসলাম রুবেল বলেন, ‘আমরা শিক্ষাসফরে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ গাছ ফেলে আমাদের পথ আটকানো হয়। এরপর কয়েকজন মুখোশধারী অস্ত্র দেখিয়ে সব লুট করে নেয়। আমরা আতঙ্কে ছিলাম, কেউ বাধা দেওয়ার সাহস পাইনি।’
এ সময় তিন ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। তবে পুলিশ ডাকাতির বিষয়টি স্বীকার করলেও শ্লীলতাহানির বিষয়ে কোন কথা বলেননি।
ডাকাতদের ভয়ংকর রূপ দেখে জ্ঞান হারান কৃষি বিষয়ের শিক্ষক আবুল কালাম (৫২)। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সিনথিয়া আক্তার জানায়, ভয়ে সে অনেক কেঁদেছে এবং এখনো আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
ডাকাতির ঘটনার পর থেকেই গ্রামবাসীরা রাতে পালাক্রমে পাহারা দিতে দেখা যায়। মালিরচালা এলাকার বাসিন্দা মো. হায়দার আলী সিকদার বলেন, ‘আমরা গ্রামবাসী রাতভর পাহারা দিচ্ছি। আতঙ্কের মধ্যে কাটছে সময়। পুলিশের সঙ্গে একেকদিন বিশজনের দল কাজ করছি।
স্থানীয় আব্দুস সালাম লিটন ভূঁইয়া বলেন, ‘ডাকাতির ফলে পুরো এলাকার মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। সজাগ থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। পুলিশের আরও সহায়তা প্রয়োজন।’
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম জানান, ‘ডাকাতির ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি এবং অপরাধীদের শনাক্ত করতে কাজ করছি। ডাকাতদের ধরতে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।’
উল্লেখ্য, এ ঘটনা নিয়ে ঘাটাইল- সাগরদিঘী সড়কে গত ১২ দিনে তিনটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে গত শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে আজমত আলী নামের একব্যক্তিকে কুপিয়ে টাকা, মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন লুট করা হয়েছে। এছাড়া গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার সন্ধানপুর ইউনিয়নের ঘাটাইল-সাগরদীঘি সড়কের ফকিরচালা এলাকায় হানা দেয় ডাকাতদল। এলাকাবাসি ও পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় সংঘবদ্ধ ডাকাতরা।
যানবাহনের মধ্যে ছিল ট্রাক, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল। ছিনিয়ে নেয় নগদ ২০ হাজার টাকা এবং ২০ হাজার টাকা মূল্যের একটি স্মার্টফোন এবং কাঁচামালবাহী এক ট্রাক চালকের কাছে থেকেই লুট করা হয় ৬০ হাজার টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র।
গ্রামবাসীরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।
thebgbd.com/NA