আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স বৃহস্পতিবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও জুলাই গণআন্দোলনের শীর্ষ নেতা নাহিদ ইসলামের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন স্যাম জাহান, যা সরকারি বাসভবনে গ্রহণ করা হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, "অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো জনগণের নিরাপত্তা পুরোপুরি নিশ্চিত করতে পারেনি, ফলে এ বছর জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন হবে।"
নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন-পীড়নের পর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। ড. ইউনূস সম্প্রতি জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের শেষের দিকে নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে, যদিও দেশে অস্থিরতা বিরাজ করছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, "সাত মাসের স্বল্পমেয়াদি সংস্কার পরিকল্পনা ছিল আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার করা। যদিও কিছু উন্নতি হয়েছে, তবে তা প্রত্যাশিত মাত্রায় পৌঁছায়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়।"
নতুন শক্তি হিসেবে এনসিপি
এনসিপির উত্থানকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বাংলাদেশের রাজনীতিতে সম্ভাব্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দীর্ঘদিনের আধিপত্যের বাইরে গিয়ে নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এনসিপি বলছে, তারা জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, তবে নির্বাচন আয়োজনের আগে ‘জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্র’ নিয়ে ঐকমত্য দরকার।
এই ঘোষণাপত্রটি বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে এবং গত বছরের সহিংসতায় নিহত এক হাজার মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এটি প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর ছাত্র আন্দোলনকারীরা সংবিধান পরিবর্তনের দাবি প্রত্যাহার করে।
নির্বাচনের ভবিষ্যৎ ও এনসিপির পরিকল্পনা
নাহিদ ইসলাম বলেন, "এক মাসের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারলে নির্বাচন দ্রুত সম্ভব, তবে দেরি হলে তা স্থগিত করা উচিত।" তিনি জানান, এনসিপির অর্থায়নে দেশের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিরা সহায়তা করছেন এবং দলটি নতুন অফিস গড়তে ক্রাউডফান্ডিং শুরু করবে।
বাংলাদেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ কোন পথে এগোবে, তা নির্ভর করছে আসন্ন রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর।
thebgbd.com/NIT