ইসলামে পর্দা করা নারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা, যা কুরআন ও হাদিসের মাধ্যমে স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। পর্দা শুধু পোশাকের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি দৃষ্টি, আচরণ, কথা ও সার্বিক শালীনতা রক্ষার একটি পূর্ণাঙ্গ বিধান।
পর্দার বিধান কুরআনের আলোকে
পর্দা করার নির্দেশনা নিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন—
"হে নবী! তোমার স্ত্রীগণ, কন্যাগণ ও মুমিন নারীদের বলো, তারা যেন নিজেদের চাদরের কিছু অংশ দিয়ে নিজেদের আবৃত করে। এতে তারা সহজেই চিহ্নিত হবে এবং কেউ তাদের উত্ত্যক্ত করবে না।" (সুরা আল-আহজাব: ৫৯)
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে—
"আর মুমিন নারীদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করে। তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তবে যা স্বাভাবিকভাবে প্রকাশ পায় তা ছাড়া।" (সুরা আন-নুর: ৩১)
এই আয়াতগুলো থেকে বোঝা যায়, ইসলামে পর্দার বিধান ফরজ এবং এটি পালন করা প্রত্যেক নারীর জন্য আবশ্যক।
হাদিসের আলোকে পর্দার গুরুত্ব
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—
"নারী গোপনীয় বস্তু (আওরাহ)। যখন সে বাইরে বের হয়, তখন শয়তান তার প্রতি দৃষ্টি দেয়।" (তিরমিজি: ১১৭৩)
আরেকটি হাদিসে তিনি বলেন—
"দুই প্রকার মানুষ জাহান্নামের অধিবাসী হবে, যাদের আমি দেখিনি... একদল নারীরা পোশাক পরা থাকলেও তারা নগ্ন থাকবে। তারা অন্যদের আকৃষ্ট করবে এবং নিজেরাও আকৃষ্ট হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং জান্নাতের সুগন্ধও পাবে না।" (মুসলিম: ২১২৮)
এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, যারা শরীর ঢেকে ঠিকমতো পর্দা করে না, তারা জান্নাত থেকে বঞ্চিত হতে পারে।
পর্দা না মানার শাস্তি
যারা ইসলামের পর্দার বিধান মানে না, তাদের জন্য ভয়াবহ শাস্তির কথা কুরআন ও হাদিসে বলা হয়েছে।
১. আল্লাহর অবাধ্যতার কারণে শাস্তি
আল্লাহ বলেন— "যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অবাধ্যতা করে এবং তাঁর সীমালঙ্ঘন করে, তিনি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন, সেখানে সে চিরস্থায়ী হবে এবং তার জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।" (সুরা আন-নিসা: ১৪)
২. জান্নাতের সুঘ্রাণ থেকেও বঞ্চিত হবে
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন— "যে নারী পর্দা করবে না, জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না।" (মুসলিম: ২১২৮)
৩. কবরের আজাব পেতে পারে
ইসলামি স্কলারদের মতে, যারা আল্লাহর ফরজ বিধান অমান্য করে, তারা দুনিয়াতেই আজাবের শিকার হতে পারে এবং কবরের শাস্তিও পেতে পারে।
পর্দা করার উপকারিতা
নারীর সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা হয়।
অনৈতিক কার্যকলাপ ও হয়রানি থেকে বাঁচায়।
সমাজে শালীনতা ও নৈতিকতা বজায় রাখে।
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয় এবং জান্নাত লাভের সম্ভাবনা বাড়ে।
ইসলামে পর্দা ফরজ একটি বিধান, যা প্রত্যেক নারীর জন্য পালনীয়। যারা এটি মানবে না, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে শাস্তির মুখোমুখি হতে পারে। তাই প্রত্যেক মুসলিম নারীর উচিত আল্লাহর আদেশ মেনে পর্দা করা এবং জান্নাতের পথ সুগম করা।
thebgbd.com/NIT