বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের নারী, আদিবাসী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাসে কানাডা সরকার ১৫ মিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী ৯ মার্চ এ অর্থায়নের কথা জানান।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক পর্বত উন্নয়ন কেন্দ্র (আইসিআইএমওডি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই পাঁচ বছরব্যাপী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট (আইসিআইএমওডি/ইসিমোড)। প্রকল্পটি তিন দেশের প্রায় ৪০ হাজার মানুষকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা দেবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জীববৈচিত্র্যের অবনতি, বায়ু দূষণ এবং পার্বত্য অঞ্চলের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে। এই পরিস্থিতিতে কানাডার অর্থায়ন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
আইসিআইএমওডি’র লাইভলিহুড বিষয়ক প্রধান আবিদ হুসেইন বলেন, হিন্দুকুশ হিমালয় অঞ্চলের মানুষের জন্য খাদ্য ও পানীয় জলের সংকট দিন দিন বাড়ছে। এখানে জনঘনত্ব বেশি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিদ্যমান এবং পরিবেশগত ঝুঁকি অত্যধিক। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নারী, কিশোরী ও আদিবাসী জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয় জ্ঞান ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ইসিমোড এই পরিস্থিতি সামাল দিতে কানাডার সঙ্গে কাজ করতে পেরে আনন্দিত।
এই প্রকল্পের অন্তর্বর্তীকালীন সমন্বয়ক ও আইসিআইএমওডি’র সিনিয়র লাইভলিহুড বিশেষজ্ঞ আবুল কালাম আজাদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ভূমিকা অপরিহার্য। বিশেষ করে নারীদের ক্ষমতায়ন ছাড়া এই সংকটের সমাধান সম্ভব নয়। বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের পার্বত্য অঞ্চলের জন্য কানাডার এই সহায়তা টেকসই ভূমি ও পানি ব্যবস্থাপনা, নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার ও জীবনমান উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ী ভূমি ও জল সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে, যা পরিবেশের টেকসই পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে সহায়ক হবে। এছাড়া, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করা হবে এবং নারী ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক সুযোগ ও ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রকল্পটি তিন দেশের ‘জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা’ (NAP/ন্যাপ)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই অঞ্চলের অভিযোজন পরিকল্পনাগুলো এখনও বিচ্ছিন্ন ও জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় যথেষ্ট কার্যকর নয়। তাই, জলবায়ু অভিযোজন উদ্যোগগুলো দ্রুত এবং বৃহৎ পরিসরে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন বলে তারা মত দিয়েছেন।
thebgbd.com/NIT