২৭ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহি আদেশে বলা হয় মার্কিন সেনাবাহিনীতে আর স্থান নেই ট্রান্সজেন্ডারদের। এবার সেই নির্দেশেই স্থগিতাদেশ দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। মঙ্গলবার ফেডারেল বিচারক অ্যানা রিয়েস ট্রাম্পের সেই নির্বাহি আদেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছেন।
মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের এক নিম্ন আদালতের বিচারক অ্যানা তার রায়ে জানান, সামরিক চাকরি থেকে রূপান্তরকামী (ট্রান্স) সেনাদের বহিষ্কার করার আদেশটি তাদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত প্রশাসনকে এ বিষয়ে আবেদনের সময় দিয়েছেন এই বিচারক। অ্যানার বলেস, ‘আদালতের এই রায়ে বিতর্ক তৈরি হবে। তবে একটি সুস্থ গণতন্ত্রে দ্বিমত ইতিবাচক। তবে এ বিষয়ে আমাদের সকলেরই একমত হওয়া উচিত, যারা দেশের সেবা করার আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন, তারা সকলেই আমাদের কৃতজ্ঞতা এবং শ্রদ্ধার যোগ্য।’
আদালতের এই রায়ে খুশি মামলাকারী ১৪ জন রূপান্তরকামী সেনা। সেকেন্ড লেফ্টেন্যান্ট রূপান্তরকামী নিকোলাস ট্যালবটের বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে সেনাবাহিনী থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হবে কি না, তা জানার জন্য এতদিন প্রায় নিঃশ্বাস বন্ধ করে অপেক্ষা করছিলাম। এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারলাম। এটাই এত দিন চেয়েছি। সেনাবাহিনীতে কাজ করা আমার স্বপ্ন, অনেক কষ্টে এই চাকরি পেয়েছি। সেটাও হারাতে বসেছিলাম।’’
যদিও আদালতের রায়ের পর এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করেনি ট্রাম্প প্রশাসন। তবে ট্রাম্পের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ স্টিফেন মিলার বলেছেন, ‘বিচারকেরা এখন নিজেদের সেনাবাহিনীর সর্বেসর্বা মনে করছেন! এই উন্মাদনার কি শেষ নেই?’
রূপান্তরকামীদের জন্য সরকারি নথিতে পৃথক লিঙ্গের ব্যবস্থা নিয়ে নীতি চালু করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেন। কিন্তু ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসেই সমস্ত নীতি বদলে ফেলছেন। এমনকি, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের প্রায় ৫০ শতাংশ জুড়ে ছিল সমকামী ও রূপান্তরকামীদের বিরুদ্ধে প্রচার। ক্ষমতায় এসে প্রথমেই রূপান্তরকামীদের নিয়ে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প।
২৭ জানুয়ারি সেনাবাহিনীতে রূপান্তরকামীদের যোগের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। সেই আদেশে বলা হয়, একজন ব্যক্তির ‘লিঙ্গপরিচয়’ নিয়ে ‘দ্বন্দ্ব’ থাকলে তা কখনওই সামরিক বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় কঠোর মান পূরণ করতে পারে না! পেন্টাগনকে এক মাসের মধ্যে রূপান্তরকামীদের নিয়ে নীতি নির্ধারণের নির্দেশ দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। এরপরই সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিক ভাবে বিবৃতি দিয়ে রূপান্তরকামী নিয়োগ বন্ধের কথা জানায়। জানানো হয়, কর্মরতদের ক্ষেত্রে লিঙ্গ পরিবর্তন ও সেই সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধাও দেবে না মার্কিন সেনাবাহিনী।
সূত্র: রয়টার্স
এসজেড