ঢাকা | বঙ্গাব্দ

রমজানের শেষ রাতে রাসুল (সা.) পরিবারকে জাগিয়ে দিতেন

হাদিসে উল্লেখ করা আছে যে, রাসুল (সা.) রমজানের শেষ দশকে ইবাদত করার জন্য আরও বেশি উদ্যমী হতেন।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ২০ মার্চ, ২০২৫
রমজানের শেষ রাতে রাসুল (সা.) পরিবারকে জাগিয়ে দিতেন ছবি : সংগৃহীত।

রমজানের শেষ দশকে রাসুলুল্লাহ (সা.) বিশেষভাবে ইবাদত ও দোয়া-প্রার্থনায় সময় কাটাতেন, এবং এই সময়টা তিনি নিজের পরিবারকেও উৎসাহিত করতেন যেন তারা বেশি বেশি ইবাদত করে। এই সময়টি ছিল তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর (শক্তিশালী রাত) হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যা এক হাজার মাসের চেয়েও উত্তম হিসেবে বর্ণিত হয়েছে।


হাদিসে উল্লেখ করা আছে যে, রাসুল (সা.) রমজানের শেষ দশকে ইবাদত করার জন্য আরও বেশি উদ্যমী হতেন। আয়েশা (রা.)-এর একটি হাদিসে জানা যায়:

"রাসুল (সা.) রমজানের শেষ দশকে নিজের কোমর বেঁধে নিতেন, এবং রাতে ইবাদত করতে গিয়ে পরিবারকে জাগিয়ে দিতেন।" (সহিহ বুখারি: ২০২৪, সহিহ মুসলিম: ১১৭৪)

এখানে "কোমর বাঁধা" মানে হলো, রাসুল (সা.) অত্যন্ত আন্তরিকভাবে এবং শক্তিশালী মনোভাব নিয়ে ইবাদত করতেন। তিনি সারা রাতের ইবাদত ও দোয়া-প্রার্থনার জন্য প্রস্তুত হতেন।



রাসুল (সা.) তার পরিবারের সদস্যদেরও ইবাদতের জন্য উৎসাহিত করতেন। তিনি নিজে গভীর রাত পর্যন্ত সালাত, কুরআন তিলাওয়াত, এবং দোয়া করতেন, এবং পরিবারকেও একই কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, "তিনি রমজানের শেষ দশকে বেশি সময় ইবাদতে ব্যস্ত থাকতেন, এবং রাতের সময়টুকু পরিবারের জন্যও এক বিশাল সুযোগ হয়ে উঠত ইবাদত করার জন্য।" (সহিহ মুসলিম)


ইবাদতের বিশেষত্বরমজানের শেষ দশকে রাসুল (সা.) যখন পরিবারের সদস্যদের জাগিয়ে তুলতেন, তখন তাদের উদ্দেশ্য ছিল শরীর ও আত্মাকে পরিশুদ্ধ করা, আল্লাহর কাছে মাগফিরাত ও রহমত প্রার্থনা করা, এবং বিশেষত লাইলাতুল কদরের রাতটিতে ইবাদত করা। এটি একটি রাত, যা কুরআনে "এক হাজার মাসের চেয়ে উত্তম" হিসেবে বর্ণিত হয়েছে (সূরা আল-কদর: ৩)।



রাসুল (সা.) তার পরিবারকে শুধুমাত্র রাত জাগানোর মাধ্যমে নয়, বরং তাদের কাছে ইবাদতের গুরুত্বও তুলে ধরতেন। এটি আমাদের শেখায় যে, পরিবারের সদস্যদের জন্যও ইবাদত এবং আল্লাহর সাথে সম্পর্কের প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত, যাতে পুরো পরিবার একসাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথে চলতে পারে।


রমজানের শেষ দশক ছিল রাসুল (সা.)-এর জন্য ইবাদত ও আত্মশুদ্ধির সময়। তিনি পরিবারকে জাগিয়ে তুলতেন, যাতে তারা এই বিশেষ সময়টিতে আল্লাহর কাছে বেশি দোয়া করতে পারে এবং নিজেদের নফসের সংশোধন করতে পারে। আমাদেরও উচিত, রমজানের শেষ দশকে এই অভ্যাস গড়ে তোলা এবং পরিবারের সদস্যদেরও ইবাদতে উৎসাহিত করা, যেন আমরা সবাই লাইলাতুল কদরের বরকত লাভ করতে পারি।


thebgbd.com/NA