ঢাকা | বঙ্গাব্দ

তুরস্কে গ্রেপ্তার হাজারেরও বেশি

মঙ্গলবার পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধী দল সিএইচপি জানিয়েছে, একরেমই পরবর্তী নির্বাচনে তাদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী।
  • অনলাইন ডেস্ক | ২৫ মার্চ, ২০২৫
তুরস্কে গ্রেপ্তার হাজারেরও বেশি গ্রেপ্তার মেয়রের মুখোশে বিক্ষোভকারী

বুধবার থেকে শুরু হয়েছে মিছিল। প্রতিবাদ, বিক্ষোভে এখনও উত্তাল তুরস্ক। পাঁচ দিন ধরে বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ-জমায়েত থেকে মোট ১১৩৩ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে আজ জানিয়েছে এরদোগান সরকার। আটকদের মধ্যে রয়েছেন দেশ-বিদেশের অন্তত ৯ জন সাংবাদিকও। তাদের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ আনা হয়েছে, তা যদিও স্পষ্ট নয়।


ইস্তানবুলের মেয়র তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি বা সিএইচপির নেতা একরেম ইমামোগুলকে প্রথমে মেয়র পদ থেকে অপসারণ করা হয়। পরে তাকে আটক এবং তারও পরে গ্রেপ্তার করা হয়। দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই সোমবার তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে আদালত। 


একরেমের গ্রেপ্তারির পরই ফুঁসছিলেন তুরস্কের মানুষ। তিনি জেলে ঢোকার পর প্রতিবাদ আরও বেড়েছে। আঙ্কারা, ইস্তানবুলের মতো শহরের রাস্তা উপচে পড়ছে প্রতিবাদীদের ভিড়ে। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান আগেই হুঁশিয়ারি দেন, প্রতিবাদের নামে অগণতান্ত্রিক বা নাশকতামূলক কাজ করা যাবে না। ফলে এক দিকে তুরস্কের রাস্তায় যেমন প্রতিবাদী মানুষ, তেমনই কড়া হাতে সেই বিক্ষোভ দমনে নেমেছে পুলিশ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলিই জানাচ্ছে, ২০১৩ সালের পর এত বড় কোনও বিক্ষোভ দেখেনি তুরস্ক।


দেশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অনেক দেরি। ২০২৮ সালে। তবু সেই নির্বাচনকে ঘিরেই এই সমস্যা। একরেমের বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আগেই দাবি করেন। কারণ এরদোগান বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট পদের একমাত্র দাবিদার তিনিই। কিন্তু এরদোগান প্রশাসন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট সাফ জানিয়েছেন, দেশের আদালত দীর্ঘদিন সম্পূর্ণ নিরেপক্ষ ভাবে কাজ করে আসছে। ফলে প্রতিহিংসার তত্ত্ব সেখানে খাটে না। 


তবে মঙ্গলবার পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধী দল সিএইচপি জানিয়েছে, একরেমই পরবর্তী নির্বাচনে তাদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। জেল হলেও নির্বাচনে লড়তে পারবেন কি তিনি? আইনি বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, জেলে থাকলেও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে লড়তে পারবেন একরেম। তবে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে তা আর সম্ভব হবে না।


আঙ্কারায় মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে বিশেষ বৈঠকে বসেন এরদোগান। পরে টিভি চ্যানেলে দেওয়া এক বক্তৃতায় ফের সতর্কতা দিয়েছেন। বলেছেন, বিক্ষোভের নামে তুরস্কের রাস্তায় সন্ত্রাস ছড়ানো হচ্ছে। সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি বা পুলিশের আহত হওয়ার দায় বিরোধী দলের উপরেই চাপিয়েছেন তিনি।


বেশ কিছু পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমের বলেছে, এখনও বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শান্তই। কোথাও কোনও হামলায় জড়াননি প্রতিবাদকারীরা। একরেমের জনপ্রিয়তা আগেই ইস্তানবুল থেকে অন্য শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। ২৫ বছরের এক তরুণী এক ব্রিটিশ সংবাদ চ্যানেলকে জানিয়েছেন, পুলিশি অত্যাচারে আহত বিক্ষোভকারীদের চিকিৎসা করতে পথে নেমেছেন ডাক্তারি শিক্ষার্থীরাও। তরুণী বলেন, ‘এক জন মহিলা হিসেবে, দেশের নাগরিক হিসেবে কোনও অধিকারই আমার নেই। প্রথমে ভয় হচ্ছিল তবে এখন রীতিমতো ক্ষুব্ধ।’


সূত্র: রয়টার্স


এসজেড