নাকে সবসময় গন্ধ গন্ধ লাগা—যেটা বাস্তবে হয়তো কেউই পাচ্ছে না—এই অনুভবটা অনেক সময় বেশ অস্বস্তিকর হতে পারে। এই সমস্যাকে চিকিৎসা ভাষায় বলে “ফ্যান্টোসমিয়া” (Phantosmia), অর্থাৎ ভুলভাবে গন্ধ পাওয়া, যা আসলে চারপাশে নেই।
সম্ভাব্য কারণগুলো
১. সাইনাস সমস্যা বা ইনফেকশন
সাইনাসে প্রদাহ বা ইনফেকশন (Sinusitis) হলে ঘ্রাণশক্তি ব্যাহত হয়। কখনও মস্তিষ্কে ভুল সিগনাল পাঠিয়ে গন্ধ অনুভব করায়, যা প্রকৃতপক্ষে নেই।
২. নাকের ভেতরে পলিপ
নাকে পলিপ বা টিউমার থাকলে ঘ্রাণনালী চাপে পড়ে ভুল গন্ধ অনুভূত হতে পারে।
৩. মাইগ্রেন
মাইগ্রেন শুরু হওয়ার আগেই অনেকে গন্ধ বা অদ্ভুত স্বাদ টের পান। একে বলে aura—এটা মাইগ্রেনের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।
৪. স্নায়ুবিক সমস্যা
ঘ্রাণের স্নায়ু (olfactory nerve) বা মস্তিষ্কের ঘ্রাণ সংক্রান্ত অংশে সমস্যা দেখা দিলে ভুল গন্ধ পাওয়া শুরু হতে পারে। যেমন:
পারকিনসনস রোগ
আলঝেইমার
মস্তিষ্কে টিউমার
৫. কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
কিছু অ্যান্টিবায়োটিক বা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ ঘ্রাণের গণ্ডগোল ঘটাতে পারে।
৬. হরমোন বা মানসিক চাপ
বিশেষ করে উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা বা অবসাদ থেকেও অনেক সময় এমন অনুভূতি তৈরি হতে পারে।
গন্ধটা কেমন?
যদি পচা, ধোঁয়া, পোড়া বা কেমিক্যাল টাইপ গন্ধ লাগে—তা হলে এটা বেশিরভাগ সময়ই ফ্যান্টোসমিয়া।
যদি খাওয়ার সময় খারাপ গন্ধ লাগে, সেটা হতে পারে প্যারোসমিয়া (Parosmia), যেখানে আসল গন্ধ বিকৃতভাবে অনুভূত হয়।
করণীয়
ENT (নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ) দেখানো জরুরি—নাকে পলিপ, ইনফেকশন বা সাইনাস সমস্যা আছে কিনা তা জানার জন্য।
সিটি স্ক্যান বা এমআরআই লাগতে পারে যদি স্নায়ুজনিত কিছু সন্দেহ হয়।
যদি মানসিক চাপ থাকে, তাহলে রিল্যাক্সেশন, মেডিটেশন বা প্রয়োজনে সাইকোলজিস্টের সাহায্য নিতে হবে।
হঠাৎ শুরু হলে ও দীর্ঘদিন থাকে—গাফিলতি না করে দ্রুত ডাক্তার দেখানোই ভালো।