বাংলাদেশে প্রতি বছর বজ্রাপাতে প্রাণহানির ঘটনা বাড়ছে। বিশেষ করে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে খোলা মাঠ, জলাশয় বা উঁচু স্থানে থাকা মানুষের জন্য ঝুঁকি বেশি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সামান্য সচেতনতা ও সতর্কতা বজ্রাপাতের মারাত্মক বিপদ থেকে বাঁচাতে পারে।
বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা বা উঁচু গাছের নিচে আশ্রয় নেওয়া বিপজ্জনক। মাঠ, খোলা জলাশয়, নদী বা পুকুরের ধারে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ কোনো স্থানে চলে যেতে হবে। বজ্রপাতের শব্দ শোনা মাত্রই শক্ত গাছের নিচে না দাঁড়িয়ে পাকা দালান বা গাড়ির ভেতরে আশ্রয় নেওয়া সবচেয়ে নিরাপদ পদ্ধতি।
গৃহের ভেতরেও সাবধান থাকা জরুরি। বজ্রপাতের সময় বিদ্যুতের তার, টেলিফোন, ইন্টারনেট সংযোগ বা ধাতব কোনো জিনিস ছোঁয়া উচিত নয়। টিভি, ফ্রিজ, ইলেকট্রনিক যন্ত্র বন্ধ রাখা ভালো। বাসার দরজা-জানালা বন্ধ করে থাকা উচিত, কারণ বজ্রপাতের ঢেউ এগুলোর মাধ্যমে ভিতরে ঢুকতে পারে।
বজ্রপাতের সময় হাঁটাহাঁটি, মোবাইল ফোনে কথা বলা বা ছাতা ব্যবহার করাও বিপজ্জনক হতে পারে। যদি খোলা জায়গায় আটকা পড়েন, তবে মাটিতে শুয়ে না থেকে দুই পা জোড়া করে বসে পড়ুন, শরীর যত কম সম্ভব মাটির সঙ্গে সংযুক্ত রাখুন। এতে বৈদ্যুতিক তরঙ্গ শরীরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
কৃষক, জেলে, গবাদিপশু পালনকারীসহ খোলা মাঠে কাজ করা শ্রমজীবী মানুষদের জন্য বজ্রপাতের সময় সচেতনতা আরও জরুরি। তাদের জন্য গ্রামাঞ্চলে বজ্রনিরোধক ব্যবস্থা যেমন বজ্রনিরোধক টাওয়ার বসানো দরকার। স্কুল-কলেজ পর্যায়ে বজ্রপাত সম্পর্কে সচেতনতা কার্যক্রম বাড়ানোর ওপরও গুরুত্বারোপ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সবশেষে মনে রাখতে হবে, বজ্রপাতের সময় প্রকৃতি যে সতর্ক সংকেত দেয়—আকাশ কালো হওয়া, বিদ্যুৎ চমকানো, গম্ভীর শব্দ হওয়া—এসব লক্ষণ দেখলেই দ্রুত নিরাপদ আশ্রয় নেওয়া উচিত। কারণ, দ্রুত সিদ্ধান্তই জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।