ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকারের সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে এবার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তিনিই নন, তার সঙ্গে বিগত সরকারের আরও ছয় সাবেক মন্ত্রীসহ মোট ২২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় তদন্তের আওতায় এনেছে সরকার। এসব অভিযোগ যাচাই-বাছাই করছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।
১৩ এপ্রিল জামুকার ৯৫তম সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যাদের মুক্তিযুদ্ধ সংশ্লিষ্ট তথ্য নিয়ে সন্দেহ রয়েছে, তাদের আবেদন, গেজেট, সভার কার্যবিবরণীসহ সব ধরনের প্রমাণাদি যাচাই করা হবে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী জানান, মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে একটি নির্দিষ্ট ফরম প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কিত তথ্য দেওয়া যাচ্ছে। গণমাধ্যম ও সরাসরি আবেদনের মাধ্যমেও বহু অভিযোগ জমা পড়েছে।
মোজাম্মেল হককে নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর। তখন প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়, যদিও ভারতের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৫১ হাজার মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তার নাম নেই। এমনকি জাতীয় জাদুঘরে রাখা লাল মুক্তিবার্তার ১৯৮৬ সালের ভলিউমেও তার নাম ঘষামাজা করে ঢোকানোর অভিযোগ রয়েছে।
তালিকাভুক্ত অন্যদের মধ্যে আছেন সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খান, টিপু মুনশি ও সাবেক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোজাম্মেল হোসেন। এছাড়া রয়েছেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক আইজিপি, সেনা কর্মকর্তা, সচিব, কর কমিশনার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ আরও অনেকে।
যদি তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও গেজেট বাতিল করা হবে বলে জানা গেছে।
thebgbd.com/NIT