ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ইয়ারমুকের যুদ্ধ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ০১ মে, ২০২৫
ইয়ারমুকের যুদ্ধ ইয়ারমুকের ঐতিহাসিক যুদ্ধে মুসলিমদের সৈন্যবাহিনী ছিল ৪০ হাজার থেকে ৪৫ হাজার। আর রোমানদের ছিল ২ লাখ ৪০ হাজার।

ইয়ারমুকের যুদ্ধ (Battle of Yarmouk) ইসলামের ইতিহাসে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও টার্নিং পয়েন্ট বলা হয়। এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল হিজরি ১৫ সালে (খ্রিস্টীয় ৬৩৬ সাল), খলিফা হযরত উমর (রাঃ)-এর শাসনামলে। মুসলিম বাহিনী এবং বাইজান্টাইন (রোমান) খ্রিস্টান সাম্রাজ্যের মধ্যে বর্তমান সিরিয়া ও জর্ডান সীমান্তবর্তী ইয়ারমুক নদীর তীরে এ যুদ্ধ হয়।


 ইসলামি বর্ণনায় যুদ্ধের গুরুত্ব


১. ইসলামের বিস্তার: ইয়ারমুকের বিজয়ের মাধ্যমে রোমানদের থেকে সিরিয়া ও শাম অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ মুসলিমদের হাতে চলে আসে। এই অঞ্চল পরবর্তী সময়ে ইসলামি সভ্যতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।


২. সাহাবিদের নেতৃত্ব ও বীরত্ব: এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন সাহাবি হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রাঃ)। তাঁকে রাসূলুল্লাহ (সা.) ‘আল্লাহর তরবারি’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। তাঁর কৌশল, সাহসিকতা ও সংগঠনের দক্ষতায় মুসলিমরা অপেক্ষাকৃত কমসংখ্যক হয়েও জয় লাভ করে।


৩. সংখ্যা ও বিশ্বাসের পার্থক্য: মুসলিম বাহিনীর সংখ্যা ছিল আনুমানিক ৩০-৪০ হাজার, আর বাইজান্টাইনদের সংখ্যা ছিল প্রায় ২ লক্ষ। তা সত্ত্বেও মুসলিমরা তাওহীদের শক্তি, সংহতি ও সাহসিকতায় জয়লাভ করে। ইসলামি ইতিহাসে এটি "ঈমান বনাম অস্ত্রের" একটি প্রতীকী বিজয় হিসেবে বিবেচিত হয়।


৪. শহীদদের মর্যাদা: ইয়ারমুক যুদ্ধে অনেক সাহাবি শহীদ হন, এবং তাঁদের সম্পর্কে ইসলামি বর্ণনায় উল্লেখ আছে যে, শহীদদের জান্নাতে বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। কোরআন ও হাদীসে শহীদদের জন্য রয়েছে বড় প্রতিদান।


কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি সূত্র:


ইবন কাসীর, তাবারী, ইবন আসাকির প্রমুখ ঐতিহাসিকদের লেখায় ইয়ারমুকের বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়।


হাদীস গ্রন্থে সরাসরি যুদ্ধের ঘটনা কম থাকলেও সাহাবিদের জীবনীতে এই যুদ্ধের প্রভাব ও তাৎপর্য বিস্তৃতভাবে এসেছে।


ইয়ারমুকের যুদ্ধ শুধু একটি সামরিক বিজয় ছিল না, বরং এটি ছিল ইসলামের আদর্শ ও নেতৃত্বের নৈতিক জয়। এটি প্রমাণ করে, ঈমান, নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা এবং আল্লাহর ওপর ভরসা থাকলে সংখ্যায় কম হলেও বড় পরাজিত শক্তিকে হারানো সম্ভব।


thebgbd.com/NIT