ঢাকা | বঙ্গাব্দ

কিউবায় বিরোধীদের গ্রেপ্তার

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ গ্রেপ্তারকে ‘নির্মম আচরণ ও অন্যায্য আটক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
  • অনলাইন ডেস্ক | ০২ মে, ২০২৫
কিউবায় বিরোধীদের গ্রেপ্তার যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক চুক্তির আওতায় জামিনে মুক্তি পাওয়া কিউবার বিরোধী নেতা হোসে দানিয়েল ফেরার ও ফেলিক্স নাভারোকে আবারও গ্রেপ্তার করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার দেশটির সুপ্রিম কোর্ট তাদের মুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে জামিন বাতিলের ঘোষণা দিলে এই গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটে।


হাভানা  থেকে এএফপি  জানায়, ২০২১ সালের জুলাইয়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর ফেরার ও নাভারোসহ ৫৫৩ জনকে আটক করে কিউবা। পরে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে এক চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র কিউবাকে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকদের তালিকা থেকে বাদ দিলে কিউবা ওই বছর জানুয়ারিতে এসব বন্দির মুক্তির ঘোষণা দেয়। ফেরার ছিলেন মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত মুখ।


বাইডেনের উত্তরসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর কিউবাকে আবারও সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। মঙ্গলবার ফেরার (৫৪) ও নাভারো (৭২)-কে গ্রেপ্তারের কথা জানায় দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। আদালতের ভাষ্য অনুযায়ী, জামিনে থাকাকালে ফেরার আদালতের দুটি তলব প্রত্যাখ্যান করেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আদালতে না যাওয়ার ঘোষণাও দেন। নাভারোর বিরুদ্ধে আদালতের অনুমতি ছাড়া সাতবার নিজের জেলার বাইরে যাওয়ার অভিযোগ আনা হয়।


যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ফেরারের বোন আনা বেলকিস ফেরার গার্সিয়া এক্সে (সাবেক টুইটার) লেখেন, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ফেরারের বাসভবন ও সংগঠন ইউএনপিএসিইউ’র সদরদপ্তরে অভিযান চালায়। সেখান থেকে ফেরার, তার স্ত্রী নেলভা, তাদের সন্তান ছোট দানিয়েল হোসে ও আরও কয়েকজন কর্মীকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। নাভারোকে মঙ্গলবার সকালে নিজ বাসা থেকে আটক করা হয় বলে জানান কাউন্সিল ফর ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশন ইন কিউবা (সিটিডিসি)-র নেতা মানুয়েল কুয়েস্তা মরুয়া।


মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দুজনকেই ‘রাজনৈতিক বন্দি’ ঘোষণা করে। তবে কিউবা বরাবরই রাজনৈতিক বন্দির অস্তিত্ব অস্বীকার করে আসছে এবং বিরোধীদের ‘মার্কিন অর্থে পরিচালিত ভাড়াটে’ হিসেবে অভিহিত করে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ গ্রেপ্তারকে ‘নির্মম আচরণ ও অন্যায্য আটক’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। একইসঙ্গে ফেরার-নাভারোর পরিবার ও অন্যান্য বিরোধী কর্মীদের গ্রেপ্তারও তারা প্রত্যাখ্যান করে।


বাইডেনের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির অধীনে কিউবা দাবি করে, তারা ৫৫৩ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে, যাদের মধ্যে ২৩১ জনকে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে চিহ্নিত করে। জানুয়ারিতে মুক্তি পাওয়ার পর ফেরার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারবিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। পাশাপাশি তিনি বিদেশে থাকা কিউবানদের সহায়তায় একটি দাতব্য রান্নাঘর পরিচালনা করছিলেন, যা দারিদ্র্যের বাস্তবতা সামনে আনার জন্য সরকারকে ক্ষুব্ধ করে বলে ধারণা করা হয়।


সিটিডিসি এক বিবৃতিতে বলেছে, ফেরার ও নাভারোকে পুনরায় গ্রেপ্তারের ঘটনা একটি ‘সমন্বিত রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা অভিযান’, যার লক্ষ্য কিউবার বিরোধী আন্দোলনের দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে নিষ্ক্রিয় করা। তবে কিউবার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্লোস ফার্নান্দেজ দে কোসিও এক্সে লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসন থেকে আত্মরক্ষার অধিকার কিউবার রয়েছে।


সূত্র: এএফপি


এসজেড