তরমুজ গরমের দিনে এক পরম আরামদায়ক ফল। রসালো ও ঠাণ্ডা এই ফলটি খাওয়ার সময় আমরা প্রায় সবাই একটি কাজ করি—বীজ ফেলে দিই। কিন্তু জানেন কি, তরমুজের এই ছোট ছোট বীজেই লুকিয়ে আছে অনেক স্বাস্থ্যগুণ? একে শুধু "অপ্রয়োজনীয় অংশ" ভাবলে বড় ভুল হবে।
তরমুজের বীজে কী থাকে?
তরমুজের বীজ দেখতে ছোট হলেও এটি পুষ্টিতে ভরপুর। গবেষণা অনুযায়ী, এতে থাকে—প্রোটিন, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন বি গ্রুপ (B1, B3, B6), ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড
তরমুজের বীজ খেলে যেসব উপকার হয়
হৃদপিণ্ডের যত্নে সহায়ক: বীজে থাকা ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে।
হজমশক্তি বাড়ায়: তরমুজ বীজে রয়েছে ফাইবার, যা হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী: এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং জিঙ্ক ও ম্যাগনেশিয়াম চুলের গোঁড়া মজবুত করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: গবেষণায় দেখা গেছে, তরমুজ বীজ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে।
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে: বীজে থাকা জিঙ্ক ও আয়রন শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
সতর্কতা: খাওয়ার নিয়ম কী হবে?
পরিমাণে কম খান: অতিরিক্ত বীজ খাওয়া বদহজম বা গ্যাসের কারণ হতে পারে। দিনে এক চা চামচ পরিমাণ যথেষ্ট।
কাঁচা নয়, ভেজে বা শুকিয়ে খান: বীজ শুকিয়ে ভেজে বা রোস্ট করে খেলে তা সহজে হজম হয় এবং স্বাদও বাড়ে।
শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে পরামর্শমতো খাওয়া উচিত।
কীভাবে খাবেন তরমুজের বীজ?
রোস্ট করে নাস্তার সাথে
স্মুদি বা শেকের ওপর ছড়িয়ে
সালাদে মিশিয়ে
ঘরে তৈরি গ্রানোলায় ব্যবহার করে
পুষ্টিবিদ ডা. জারিন মাহতাব বলেন, “তরমুজের বীজ ফেলে না দিয়ে পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত। এটি শরীরে মিনারেল ঘাটতি পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।”
তরমুজের বীজ খাওয়া কোনো ক্ষতিকর অভ্যাস নয়—বরং এটি হতে পারে একটি স্বাস্থ্যকর ও প্রাকৃতিক পুষ্টি উৎস।
তাই পরেরবার তরমুজ খাওয়ার সময় বীজগুলো ফেলার আগে একবার ভাবুন—সোনার খনি ফেলে দিচ্ছেন না তো?