জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘সরকার যদি বিচার না করে, তাহলে জনগণ জনতার আদালতে আওয়ামী লীগের বিচার করবে।’ শুক্রবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ তিনি এ কথা বলেন।
আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রমাণ করেছে, আওয়ামী লীগের পরিকল্পনায় ও নির্দেশে জুলাই মাসে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তাদের বিচার এবং দল হিসেবে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি।’
তিনি বলেন, ‘যারা গণহত্যা চালিয়েছে, গুম-খুন করেছে, তাদের বিচার না করে রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া যাবে না। আমরা পাড়ায় পাড়ায় জনতার আদালত গড়ে তুলব। এই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের বিচার করা হবেই।’
জুলাই আন্দোলনের অন্যতম এই সংগঠক বলেন, ‘বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কারণে জুলাই ঘোষণাপত্র এখনো আসছে না। ভুলে গেলে চলবে না, জুলাই অভ্যুত্থানের ফলেই আজ বাংলাদেশে যাঁরা রাজনীতি করছেন, ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, তাঁরা শহীদদের আত্মত্যাগের ফলেই এই স্বপ্ন দেখছেন। অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে। শাষণ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে, রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে মৌলিক সংস্কারের উদ্দেশ্যে জুলাই সনদ কার্যকর করতে হবে। জুলাই সনদে সুস্পষ্টভাবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা থাকতে হবে।’
সমাবেশে দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রশ্নের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চের লড়াই চলবে। এ দেশের রাজনীতিতে এই দলটির কোনো স্থান নেই।’
দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, ‘বিচার ও সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। শহীদদের পরিবারের অধিকার আছে ঠিক কী সংস্কার দরকার, সেটা বলার।’
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা প্রশ্ন তোলেন, ‘আর কত হত্যা, গুম হলে একটি দলের নিবন্ধন বাতিল হবে? যারা হাজার হাজার মানুষকে আহত করেছে, তাদের রাজনীতি করার অধিকার কিভাবে থাকে?’
সমাবেশে দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এই বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না। আমার এই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ চাই। আমরা খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই।’
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘কোনো যদি কিন্তু অথবা নেই। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কোনো অনুরোধ করছি না, আমরা কোনো দাবি করছি না। আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিচ্ছি। আওয়ামী লীগকে অনতিবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘যারা বাংলাদেশে খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিল, সেই মুজিববাদী পরিবারকে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দিল্লি পাঠিয়ে দিয়েছে।’
দলের সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘এই দাবিতে আজ আবারও রাজপথে দাঁড়াতে হচ্ছে, এটা জাতির জন্য লজ্জার।’
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী (সিইও) মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।
সমাবেশে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারওয়ার নিভাসহ দলের কেন্দ্রীয় এবং ঢাকা মহানগরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
thebgbd.com/NA