ঢাকা | বঙ্গাব্দ

কেরানীগঞ্জে ‘রাজ্য’ গড়ে শত শত গরিবের জমি দখল করেছিলেন প্রতিমন্ত্রী বিপু

শত শত গরিব মানুষের জমি দখল করে ধীরে ধীরে নিজের ‘রাজ্য’ গড়ে তুলেছিলেন সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৩ মে, ২০২৫
কেরানীগঞ্জে ‘রাজ্য’ গড়ে শত শত গরিবের জমি দখল করেছিলেন প্রতিমন্ত্রী বিপু ছবি : সংগৃহীত।

শত শত গরিব মানুষের জমি দখল করে ধীরে ধীরে নিজের ‘রাজ্য’ গড়ে তুলেছিলেন সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর, ভাওরবিটি, ধলেশ্বরী, পানগাঁও, ব্রাহ্মণগাঁওসহ একাধিক এলাকায় গড়ে তোলেন আবাসন প্রকল্প, খামারবাড়ি, বাগানবাড়ি, বাংলোবাড়ি। বাদ যায়নি সরকারের ঝিলমিল প্রকল্পের জমিও। নদীর জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সবকিছুই গড়ে তুলেছেন জবরদখলের মাধ্যমে।


আওয়ামী লীগের টানা শাসনামলে ১৫ বছর কেরানীগঞ্জ একচ্ছত্রভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছেন বিপু। সন্ত্রাসী, লাঠিয়াল, মাদকাসক্তদের দিয়ে চক্র গঠন করে জমি দখলের কাজ চালাতেন। তার বিরুদ্ধে ভয়ংকর ভূমিদস্যু হিসেবে স্থানীয়দের মাঝে পরিচিতি থাকলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলত না। জমি রেজিস্ট্রি অফিসে নিষেধাজ্ঞা জারি করে জমি বিক্রি বন্ধ করে দিতেন, পরে নামমাত্র দামে তা কিনে নিতেন।


জানা যায়, বিপুর নির্দেশে রাজেন্দ্রপুর রেজিস্ট্রি অফিসে প্রায় এক দশক সাধারণ মানুষের জমি নিবন্ধন বন্ধ ছিল। তার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগী ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের জসিম মাহমুদ, হাজি ফিরোজ আলমের মেয়ের জামাই নজরুল ইসলাম নজু এবং হামিদুর রহমান হামিদ জমি দখলে নেতৃত্ব দিতেন।


সরকার পতনের পর পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। ২০২4 সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিপুর প্রিয় প্রাঙ্গণ হাউজিং প্রকল্পসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর চালান ক্ষতিগ্রস্তরা। এখন অনেকে নিজ নিজ জমি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন। স্থানীয়রা জানায়, বিপুর লোকজন জমির মূল মালিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জমি দখল করত। জমি রেজিস্ট্রি বন্ধ করে রাখা হতো যেন মালিকরা জমি বিক্রি করতে বাধ্য হন।


ভাওরবিটি এলাকার প্রিয় প্রাঙ্গণ-২ প্রকল্পেও একই কায়দায় প্রায় ২০০ বিঘা জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। পানগাঁওয়ে পাঁচ হাজার শতাংশ জমি দখল করে বানানো হয়েছে খামারবাড়ি। ইটভাটা ও ডকইয়ার্ড মালিকদের জমি জোর করে কিনে নেয়া হয়েছে অল্প দামে। ঝিলমিল প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্বের জমি নিজের আবাসন প্রকল্পে যোগ করতে রাজউকের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে আটকে রেখেছিলেন বিপু।


এ ছাড়া ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গা নদীর জায়গা দখলের অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। বিআইডব্লিউটিএর পিলার ভেঙে নদীর জমিও দখল করেছেন তিনি। ক্ষতিগ্রস্ত অনেকে এখন জমি ফেরত চেয়ে সরকারের কাছে বিচার চাইছেন।


বর্তমানে বিপু আত্মগোপনে রয়েছেন। ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ছাড়া কারো ফোন ধরছেন না বলে জানা গেছে। এ কারণে তার মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।


thebgbd.com/NA