দাঁতের ক্ষয় (ডেন্টাল ক্যাভিটি) একটি সাধারণ সমস্যা যা দাঁতের এনামেল ক্ষয়ের কারণে ঘটে এবং এতে দাঁত মর্মে আঘাত পায়। এটি যদি যথাযথ সময়ে চিকিৎসা না করা হয়, তবে আরও জটিল হতে পারে। দাঁতের ক্ষয় থেকে রক্ষা বা চিকিৎসা করতে নিচে কিছু করণীয় দেওয়া হলো:
নিয়মিত ব্রাশিং ও ফ্লসিং
প্রতিদিন দুই বার ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ করুন, বিশেষ করে খাবার গ্রহণের পর। ফ্লসিং ব্যবহার করে দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাবার ও প্লাক (মোল্ড) পরিষ্কার করুন। এতে দাঁতের ক্ষয় ও প্লাক জমা কম হবে।
ফ্লুরাইড পেস্ট ব্যবহার
ফ্লুরাইড দাঁতের এনামেলকে শক্তিশালী করে এবং ক্ষয় হওয়া অংশ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে। তাই ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করুন এবং পানির মধ্যে ফ্লুরাইড থাকলে তা উপকারী হতে পারে।
শর্করা ও অ্যাসিডিক খাবার কম খান
বেশি শর্করা বা অ্যাসিডযুক্ত খাবার যেমন ক্যান্ডি, কোল্ড ড্রিংকস, ফলের রস ইত্যাদি খাওয়ার পর দাঁতে ক্ষয়ের আশঙ্কা বেশি থাকে। এসব খাবারের পর দাঁত ভালোভাবে ব্রাশ করা উচিত।
নিয়মিত ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেয়া
দাঁতের ক্ষয় বা অন্যান্য সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে প্রতিমাসে ডেন্টিস্টের কাছে যান। ডেন্টিস্ট নিয়মিত দাঁতের পরীক্ষা করতে পারবেন এবং যদি কোনো ক্ষয় থাকে, তাহলে সেটি শুরুর পর্যায়ে সনাক্ত করে চিকিৎসা করতে পারবেন।
ফ্লুরাইড ট্রিটমেন্ট
যদি দাঁতের ক্ষয় শুরু হয়ে থাকে, তবে ডেন্টিস্ট ফ্লুরাইড ট্রিটমেন্ট দিয়ে দাঁতের এনামেল শক্তিশালী করতে পারেন এবং ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করতে পারেন।
ফিলিং বা রুট ক্যানাল থেরাপি
যদি দাঁতের ক্ষয় গুরুতর হয়ে যায়, তাহলে ডেন্টিস্ট ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পরিষ্কার করে ফিলিং বা রুট ক্যানাল থেরাপি করতে পারেন। ফিলিং দাঁতের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পূর্ণ করে দাঁতকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনে। রুট ক্যানাল থেরাপি তখন করা হয় যখন দাঁতের নার্ভ আক্রান্ত হয়।
টুথ সিল্যান্ট
কিছু মানুষের জন্য দাঁতের কোণে বা পৃষ্ঠে ছোট ছোট গভীর গর্ত থাকতে পারে, যেখানে প্লাক জমে সহজে ক্ষয় তৈরি হয়। এই গর্তগুলোতে সিল্যান্ট (এক ধরনের সুরক্ষামূলক কোটিং) প্রয়োগ করা যেতে পারে, যা দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।
দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো খাদ্য
দুধ, পনির, শাকসবজি, সামুদ্রিক মাছ, ডিম এবং তাজা ফলমূল খাওয়া দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এসব খাবারে উপস্থিত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি দাঁতের শক্তি বাড়ায় এবং ক্ষয় রোধ করে।
এছাড়া, দাঁতের ক্ষয় থেকে রক্ষা পেতে মৌলিক যত্ন ও সচেতনতা বজায় রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি দাঁতে কোনো ব্যথা বা অন্য কোনো সমস্যা অনুভব করেন, তবে দ্রুত ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।