ঢাকা | বঙ্গাব্দ

নবীযুগে কথা বলা দুটি আজব প্রাণী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৪ মে, ২০২৫
নবীযুগে কথা বলা দুটি আজব প্রাণী ফাইল ছবি

নবীযুগে কথা বলা দুটি আজব প্রাণী নিয়ে ইসলামী ঐতিহ্যে কিছু আকর্ষণীয় কাহিনী রয়েছে, যেখানে প্রাণীদের বিশেষ ক্ষমতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে দুটি প্রধান ঘটনা নিম্নে বর্ণনা করা হলো:


১. খোযা (এজহাদ) নামক উটের কাহিনী: এটি ইসলামী ইতিহাসে একটি বিখ্যাত ঘটনা, যেখানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি উটের সাথে কথা বলেছিলেন। এই উটের নাম ছিল খোযা (বা এজহাদ)। হাদিসে উল্লেখ রয়েছে যে, একটি যাত্রাপথে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সাহাবিদের সাথে একটি উটের ওপর চড়ে ছিলেন। খোযা নামক উটটি ছিল তার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। একদিন এই উটটি নবীজি বা তার সাহাবিদের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে উটের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে তারা তার কষ্ট ও অভাবের কথা জানায়। উটটি প্রকাশ্যে তার অবস্থার বর্ণনা দেয় এবং জানায়, এটি তার মালিকের কাছে অযথা ব্যবহার ও অত্যাচারের শিকার হয়েছে, ফলে তার অবস্থা সংকটময় হয়ে দাঁড়িয়েছে।


এই ঘটনা ছিল একটি অলৌকিক ঘটনা, যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মহিমার সাক্ষ্য দেয়। খোযার (এজহাদ) এই কথা বলার ঘটনা সাহাবিদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হয়ে দাঁড়ায়, যে, এমন অদ্ভুত ঘটনাও সম্ভব, যেখানে প্রাণীও মানবজাতির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। নবীজির ব্যবস্থাপনায় উটটির শাস্তি ও তার মালিকের প্রতি দয়ার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হয়।


২. উকাব (ভয়ানক সাপ): এটি ইসলামী ঐতিহ্যের আরেকটি বিস্ময়কর ঘটনা, যেখানে একটি সাপ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে কথা বলেছিল। হাদিসে বলা হয়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন তার সাহাবিদের সঙ্গে যাত্রা করছিলেন, এবং তখন একটি ভয়ানক সাপ (যার নাম ছিল উকাব) তাদের সামনে আসে। সাপটি তাদের সামনে এক অসাধারণ ঘটনা উপস্থাপন করে। সাপটি তার কষ্ট এবং অভাবের কথা জানিয়ে বলেন যে, এটি একটি অতি নির্যাতিত প্রাণী, যে কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছে।


এই ঘটনাটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, কারণ এটি প্রাণীর ভাষা শোনার এবং তার অনুভূতি বুঝতে সক্ষম হওয়ার এক অলৌকিক পরিস্থিতি উপস্থাপন করে। সাপটির কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে শান্তনা দেন এবং তার সমস্যার সমাধান করেন।


এ ঘটনা থেকে শিক্ষা:

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে এমন অলৌকিক ঘটনা বা ‘আজব’ ঘটনা ঘটানো হয়েছিল, যা পরবর্তীতে মুসলিম বিশ্বে একটি শিক্ষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রাণীও যদি মানবজাতির সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হতে পারে, তবে তারাও আল্লাহর সৃষ্টি এবং তাদেরও সম্মান এবং সহানুভূতির প্রাপ্য।


এই ধরনের ঘটনা মুসলিম সমাজে পশুদের প্রতি সহানুভূতি, আদর এবং নৈতিক দায়িত্ববোধের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পশুদের প্রতি করুণা ও দয়া প্রদর্শন করেছিলেন, এবং তার জীবনাবলম্বন করা উচিত ছিল তার অনুসারীদেরও।


এ ধরনের অলৌকিক ঘটনাগুলি মানুষের মাঝে বিশ্বাস ও ঈমানকে দৃঢ় করার মাধ্যমে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণে পরিবর্তন আনে, এবং তারা বুঝতে পারে যে, বিশ্বে আল্লাহর অসীম ক্ষমতা প্রতিটি সৃষ্টির মধ্যে নিহিত রয়েছে।


thebgbd.com/NIT