ঢাকা | বঙ্গাব্দ

৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান ট্রাম্পের

ট্রাম্প বলেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র চায় অন্তত ৩০ দিনের একটি নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি।’
  • অনলাইন ডেস্ক | ১০ মে, ২০২৫
৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির জন্য ফের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি রাশিয়াকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি না মানলে নতুন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে। ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার পর ট্রাম্প এই বক্তব্য দেন। চলমান যুদ্ধে কিয়েভ ও মস্কো, উভয়ের প্রতি বাড়তে থাকা হতাশার মধ্যে নিজেকে শান্তির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন তিনি।


ট্রাম্প বলেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র চায় অন্তত ৩০ দিনের একটি নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি।’ ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক বার্তায় তিনি আরও বলেন, ‘যদি এই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করা হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার অংশীদাররা অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘উভয় দেশকে এই সরাসরি আলোচনার পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে। এ যুদ্ধ থামাতে তারা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।’


মার্চ মাসে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা গ্রহণ করলেও, রাশিয়া তা প্রত্যাখ্যান করে। কারণ হিসেবে তারা বলছে, যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের পাল্লা এখন ভারী এবং ট্রাম্পের আমলে ইউক্রেনে মার্কিন সহায়তা হ্রাস পাচ্ছে।


এদিকে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তিন দিনের একতরফা যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। দিনটি উদযাপনে মস্কোতে বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজ আয়োজন করা হয়, যেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং উপস্থিত ছিলেন।


হোয়াইট হাউসে ফিরলে একদিনেই যুদ্ধ শেষ করে দেবেন, এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসা ট্রাম্প ইতোমধ্যে পুতিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এর মাধ্যমে ২০২২ সালে ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর থেকে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের আরোপিত কূটনৈতিকভাবে একঘরে করে রাখার নীতিও কার্যত ভেঙে দিয়েছেন তিনি।


তবে যুদ্ধ চলতে থাকায় এখন ট্রাম্পের মধ্যে জেলেনস্কি ও পুতিন, উভয়ের প্রতিই অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, তিনি একটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তি চান। ‘এটি খুব দ্রুতই সম্ভব। আমাকে দরকার হলে যেকোনো মুহূর্তে প্রস্তুত,’ তিনি লেখেন।


আগামী সপ্তাহে ট্রাম্প সৌদি আরব সফরে যাচ্ছেন। দেশটি রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পৃথক আলোচনা আয়োজনের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘মনে করি না যে সৌদি আরবে পুতিনের সঙ্গে হঠাৎ কোনও বৈঠক হবে। তবে আমরা খুব ভালো কথা বলছি, সত্যিই খুব ভালো।’


সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের মার্কিন সহায়তা পাওয়ার পরও অকৃতজ্ঞতার অভিযোগ তুলে হোয়াইট হাউস বৈঠকে ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের রোষানলে পড়েন জেলেনস্কি। এরপর থেকে তিনি নিজেকে শান্তির পথে বাধা নন, এই বার্তা প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট।


বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের সংসদ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজসম্পদ সংক্রান্ত একটি চুক্তি অনুমোদন করেছে, যা জেলেনস্কি হোয়াইট হাউসের সেই অপ্রত্যাশিত বিতর্কিত বৈঠকে সই করার জন্য নিয়ে যান। এই চুক্তিতে উচ্চপ্রযুক্তি খাতে ব্যবহৃত ইউক্রেনের প্রাকৃতিক সম্পদ ও খনিজের যৌথ উন্নয়ন নিয়ে কথা বলা হয়েছে, যদিও এতে কোনো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নেই। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক স্বার্থ জোরদার হলে সেটিই রাশিয়ার বিরুদ্ধে এক ধরনের কৌশলগত প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করবে।


সূত্র: এএফপি

 

এসজেড