কাতার সফরের আগে সিরিয়ার নতুন নেতা আহমেদ আল-শারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশাপাশি সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সৌদি আরবের রিয়াদে বক্তৃতাকালে এই ঘোষণা দেন ট্রাম্প। বুধবার রিয়াদে ছয়টি উপসাগরীয় দেশের নেতাদের সঙ্গে কূটনৈতিক বৈঠকের পর তিনি কাতারের উদ্দেশে রওনা দেবেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
রিয়াদ থেকে এএফপি জানায়, রিয়াদে একটি বিনিয়োগ সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে যাচ্ছি যাতে তারা আবার শ্রেষ্ঠত্বের পথে ফিরতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যা কিছু করছি, সবই যুবরাজের জন্য।’ গত বছর আসাদ সরকারের পতনের পর এই পরিকল্পনার কথা জানালেন ট্রাম্প।
তিনি সিরিয়ার নতুন নেতা আহমেদ আল-শারার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, তুরস্ক ও সৌদি আরবের সহায়তায় গত ডিসেম্বরে বহুল আলোচিত বিদ্রোহের মাধ্যমে বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হন।
বক্তৃতা দেয়ার সময় ট্রাম্প বলেছেন, সিরিয়ার ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সময় এসেছে। এই পদক্ষেপ তাদের মহত্ত্বের সুযোগ দেবে বলেও জানান তিনি। রিয়াদে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ ফোরামে দেয়া বক্তব্যে ট্রাম্প আরও বলেছেন, ‘সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
এদিকে, মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিসেম্বরে আসাদ সরকারের পতনের পর ক্ষমতা দখলকারী আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার সরকারের জন্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার একটি উল্লেখযোগ্য জয়। এটিকে সম্ভবত ইসরায়েলি সরকারের জন্য একটি আঘাত হিসেবে দেখা দিতে পারে। আসাদের পতনের পর সিরিয়ায় সামরিক ও আঞ্চলিক তৎপরতা বাড়া ইসরায়েল।
ট্রাম্প বলেছেন, ‘সিরিয়ার মানুষ বহু বছর ধরেই প্রহসন, যুদ্ধ এবং হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। এই কারণেই আমার প্রশাসন এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র এবং সিরিয়ার মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের দিকে প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছে।’ ট্রাম্প বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই সপ্তাহের শেষের দিকে তুরস্কে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
কয়েক দশকের স্বৈরশাসনের পর, ডিসেম্বরে বাইডেন প্রশাসনের সময় আসাদ সরকারের পতন ঘটে এবং সিরিয়ার নতুন নেতারা আশা করেছিলেন, ট্রাম্প দেশটির ওপর থেকে শাস্তিমূলক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার কথা বিবেচনা করবেন। সিরিয়ার ওপর এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কার্যকর ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা। যার উদ্দেশ্য ছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে ও অর্থনৈতিকভাবে সিরিয়াকে চাপে রাখা।
সূত্র: এএফপি, সিনহুয়া
এসজেড