প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান চন্দ্র রায় পোদ্দারের এক বক্তব্যের প্রতিবাদে ফেসবুকে দেওয়া পোস্টের প্রায় চার মাস পর বরখাস্ত করা হয়েছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার আবুল কাশেম বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনিবুল হক বসুনিয়াকে। তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন।
শনিবার (১৭ মে) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) স্বপন কুমার রায় চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ডিপিইও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বরাতে জারি করা আদেশে বলা হয়, মনিবুল হক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ব্যক্তিগত আইডি থেকে উপদেষ্টা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন, যা সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তির ক্ষতি করে। এটি সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা-২০১৯ ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার পরিপন্থী।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২৬ জানুয়ারি চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ডা. রায় পোদ্দারের বক্তব্য ঘিরে। তিনি বলেন, “শিক্ষকদের পেশাকে টাকার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা উচিত নয়, পোষালে থাকুন, না পোষালে চলে যান।” এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে এক দীর্ঘ প্রতিক্রিয়ায় মনিবুল হক লিখেছিলেন, “আপনি কোন কোটায় উপদেষ্টা হয়েছেন জানি না, আপনার ভাষা ফ্যাসিস্ট আমলের মন্ত্রীদের মতো।”
এই পোস্টের কারণেই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা যায়। মনিবুল হক বলেন, “আমি শিক্ষকদের অসম্মানজনক মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছি, একজন সংগঠক হিসেবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে চার মাস পর হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত বুঝতে পারছি না।”
তিনি আরও বলেন, “২০১৫ সাল থেকে শিক্ষকদের অধিকার নিয়ে লিখছি, এমনকি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও কথা বলেছি। তখন কিছু হয়নি। কিন্তু এখন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ।”
বরখাস্তের আগে তাকে কোনো কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে ডিপিইও জানান, “ঊর্ধ্বতন দপ্তরের নির্দেশেই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। শোকজ এখনো দেওয়া হয়নি, তবে ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে জবাব তলব করা হবে।”
thebgbd.com/NA