বিশ্বব্যাপী মানুষের সঙ্গে সম্ভাষণের সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত শব্দ হলো ‘হ্যালো’। ফোনে কথা বলার সময় কিংবা কাউকে সামনে পেলে আমরা সাধারণত এই শব্দটি ব্যবহার করি। এমনকি কখনো কখনো প্রাণীর সঙ্গেও কথার শুরুতে এ শব্দ উচ্চারিত হয়। ধারণা করা হয়, বিশ্বের প্রায় ৯৮ শতাংশ মানুষ এই ‘হ্যালো’ শব্দটি ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু বহুল ব্যবহৃত এই শব্দটির উৎপত্তি কীভাবে ঘটল, তা অনেকেই জানেন না।
‘হ্যালো’ শব্দটির উৎপত্তি হয় প্রায় ১৫০ বছর আগে, ১৮৭৭ সালে। এর সঙ্গে জড়িত টেলিফোনের ইতিহাসও। প্রায় দেড়শ বছর আগে টেলিফোন আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী স্যার অ্যালেকজান্ডার গ্রাহাম বেল। তিনি ১৮৭৬ সালে আমেরিকান টেলিফোন অ্যান্ড টেলিগ্রাফ কোম্পানি (AT&T) প্রতিষ্ঠা করেন। তখন থেকেই টেলিফোনের মাধ্যমে যোগাযোগের যুগ শুরু হয় এবং এই মাধ্যমেই ‘হ্যালো’ শব্দটির প্রচলন ঘটে।
এই শব্দটি নিয়ে দুটি প্রচলিত গল্প রয়েছে। একটি গল্প অনুযায়ী, গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কারের পর প্রথম কলটি করেন তার প্রেমিকা ‘মার্গারেট হ্যালো’কে এবং ফোনে প্রথম উচ্চারণ করেন ‘হ্যালো’। তবে এই গল্পটি পুরোপুরি ভ্রান্ত। কারণ, বেলের স্ত্রী ছিলেন ম্যাবেল গার্ডিনার হুবার্ড, কোনো মার্গারেট হ্যালো নয়।
আসলে, টেলিফোনে প্রথম বলা হয়েছিল ‘আহয়’ (ahoy-hoy)। বেল তার সহকারীকে ফোন করে এই শব্দটি ব্যবহার করেন। কিছুদিন এই শব্দটিই ব্যবহৃত হয়েছিল। তখন ফোনে কোনো রিং বা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ব্যবস্থা ছিল না। সবসময় লাইন খোলা থাকত এবং প্রয়োজন অনুযায়ী দুই পাশে কথা বলা হতো। ফলে একপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করতে সম্ভাষণ জানানো প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
১৮৭৭ সালের ১৮ জুলাই, বিজ্ঞানী থমাস আলভা এডিসন ‘প্রিন্সিপাল অব রেকর্ডেড সাউন্ড’ আবিষ্কারের সময় পরীক্ষার প্রয়োজনে বারবার ‘হ্যালো’ শব্দটি উচ্চারণ করেন। এ শব্দটিই তিনি রেকর্ড করেন তার উদ্ভাবিত পেপার সিলিন্ডার ফনোগ্রাফ যন্ত্রে। এরপর থেকে ‘হ্যালো’ শব্দটি ফোনে সম্ভাষণের প্রচলিত রূপে ব্যবহৃত হতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে তা বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আজও আমরা সেই শব্দটি ব্যবহার করে যাচ্ছি।
thebgbd.com/NA