ঢাকা | বঙ্গাব্দ

কোরবানির গোশত কতদিন রাখা যাবে?

আল্লাহ তায়ালা আরও বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমার কাছে কোরবানির পশুর গোশত ও রক্ত কিছুই কবুল হয় না, তবে আমার কাছে পৌঁছায় একমাত্র তাকওয়া।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩৭)
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৯ মে, ২০২৫
কোরবানির গোশত কতদিন রাখা যাবে? ফাইল ছবি

নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব। ১০ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত যে ব্যক্তির কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। পশু জবাইয়ের মাধ্যমে কোরবানি করতে হয়।  


কোরবানির গুরুত্ব প্রসঙ্গে মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানি নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা হালাল পশু জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩৪)


আল্লাহ তায়ালা আরও বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমার কাছে কোরবানির পশুর গোশত ও রক্ত কিছুই কবুল হয় না, তবে আমার কাছে পৌঁছায় একমাত্র তাকওয়া।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩৭)


একদা জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.) কোরবানি কী? উত্তরে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করলেন, কোরবানি হচ্ছে তোমাদের আদি পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর জীবনাদর্শ। সাহাবি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, কোরবানির ফজিলত কী? রাসুল (সা.) বললেন, পশুর পশমের পরিবর্তে একেকটি করে নেকি দেওয়া হয়।’ (মিশকাত, হাদিস : ১২৯)


রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই কোরবানিদাতার কোরবানি আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায় এবং তার অতীতের সব গুনাহ মোচন করে দেওয়া হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১/১৮০)


মহানবী (সা.) আরও ইরশাদ করেন, ‘তোমরা মোটাতাজা পশু দেখে কোরবানি করো, কারণ এ পশুই পুলসিরাতের বাহক হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৩৯)


বিশিষ্ট সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) পবিত্র মদিনায় দশ বছর জীবনযাপন করেছেন, প্রত্যেক বছরই তিনি পশু কোরবানি করেছেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১/১৮৯)


কোরবানির গোশত যতদিন ইচ্ছা রেখে খেতে পারবে। তবে ইসলামের প্রথম যুগে তিন দিনের পর আর কোরবানির গোশত সংরক্ষণের অনুমতি ছিল না। সদকা হিসেবে বিলিয়ে দিতে হতো দরিদ্র মানুষের মাঝে। সে সময় আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছিলেন—


‘তোমরা তিন দিন পর্যন্ত কোরবানির গোশত রাখতে পারো। এরপর অবশিষ্ট যা থাকে, সদকা করে দাও।’


পরবর্তীতে মানুষের জীবনে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য এলে, সে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন—


‘দরিদ্র আগমনকারীদের কথা বিবেচনা করে আমি সংরক্ষণ করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা নিজে খাও, অন্যকে খাওয়াও; সংরক্ষণও করতে পারো।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৯৭১)


প্রখ্যাত ফকিহ ইবনু আবদিল বার (রহ.) লিখেছেন, সম্মানিত আলিমগণ ঐকমত্যে পৌঁছেছেন যে, তিন দিনের পরেও কোরবানির গোশত সংরক্ষণের অবকাশ রয়েছে এবং এ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা রহিত। (আত-তামহিদ : ৩/২১৬)


thebgbd.com/NIT