ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন রোববার জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার একটি ‘গঠনমূলক’ ফোনালাপ হয়েছে। ট্রাম্প ইইউ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত সব পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের হুমকি দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্রুত বাণিজ্য চুক্তির আশ্বাস দিয়েছেন ইইউ প্রধান। ব্রাসেলস থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
তিনি এক্স-এ এক পোস্টে বলেন, ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক অংশীদার। দ্রুত ও দৃঢ়ভাবে আলোচনা এগিয়ে নিতে প্রস্তুত ইউরোপ। তিনি আরও বলেন, ‘ইউরোপ দ্রুত এবং সিদ্ধান্তমূলকভাবে আলোচনা এগিয়ে নিতে প্রস্তুত ‘একটি ভালো চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য, আমাদের আগামী ৯ জুলাই পর্যন্ত সময় দরকার।’
ব্রাসেলস ও ওয়াশিংটনের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য যুদ্ধ এড়াতে আলোচনা চলছে এবং উভয় পক্ষ আগামী ৯ জুলাই পর্যন্ত শুল্ক আরোপ স্থগিত রাখতে সম্মত হয়েছে। তবে শুক্রবার ট্রাম্প হঠাৎ করে ঘোষণা দেন, ইইউ’র সঙ্গে আলোচনা সামনে এগুবে না এবং ১ জুন থেকে ইইউর সব পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। এতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় আন্তর্জাতিক মহলে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘কোনও চুক্তি চাই না’, অভিযোগ করে বলেন, ইইউ গঠন করা হয় ‘যুক্তরাষ্ট্রকে ঠকানোর জন্য’।
এদিকে, জার্মানির অর্থমন্ত্রী ও ভাইস চ্যান্সেলর লারস ক্লিংবেইলও রোববার মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনি জার্মান দৈনিক বিল্ডকে বলেন, ‘আমাদের আর কোনো উসকানির প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন আন্তরিক ও কার্যকর আলোচনার।’ এই শুল্কযুদ্ধ শুধু ইউরোপ নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকেও ঝুঁকির মুখে ফেলবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
ট্রাম্প ইতিমধ্যে ইইউর বিরুদ্ধে তিন ধরনের আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন। সেগুলো হল, ২৫ শতাংশ স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর, গাড়ির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক এবং বাকি সব ধরনের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ ‘পাল্টা শুল্ক’, যা বর্তমানে স্থগিত রয়েছে। তবে ১০ শতাংশের একটি ভিত্তিগত শুল্ক কার্যকর রয়েছে।
ইইউর বাণিজ্য কমিশনার মারোশ সেফচোভিচ শুক্রবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ট্রাম্পের হুমকির জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি চুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে পারস্পরিক সম্মানহানি বা হুমকির ভিত্তিতে নয়।’
ব্রাসেলস জানিয়েছে, যদি আলোচনা ব্যর্থ হয়, তাহলে ইইউ প্রায় ১শ’ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইইউর পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি ছিল ২৩৬ বিলিয়ন ডলার। ইউরোপীয় কমিশনের হিসেব অনুযায়ী সেবা খাতে, সেই ঘাটতি কমে দাঁড়ায় ৫০ বিলিয়ন ইউরো বা ৫৭ বিলিয়ন ডলারে। কারণ এ খাতটিতে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি প্রভাবশালী।
সূত্র: এএফপি
এসজেড