ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বিক্ষোভের পর বিক্ষোভ, চাপে অন্তর্বর্তী সরকার

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারীদের চলমান বিক্ষোভের মধ্যেই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ মে, ২০২৫
বিক্ষোভের পর বিক্ষোভ, চাপে অন্তর্বর্তী সরকার ছবি : সংগৃহীত ।

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারীদের চলমান বিক্ষোভের মধ্যেই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এই বিক্ষোভ দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং গণঅসন্তোষ আরও বাড়িয়ে তুলছে।


ছাত্রদের নেতৃত্বে প্রাণঘাতী বিক্ষোভের ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে গেলে, গত আগস্টে শান্তিতে নোবেলজয়ী ৮৪ বছর বয়সী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন।


দেশকে নির্বাচনের পূর্বমুহূর্তে রূপান্তরের মধ্য দিয়ে পরিচালনা করতে চাওয়া ইউনূস সরকার ক্রমেই সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, রাজনীতিক এবং সামরিক বাহিনীর চাপের মুখে পড়ছে।


রোববার একটি অধ্যাদেশ জারি করে সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘ প্রক্রিয়া ছাড়াই অসদাচরণের অভিযোগে বরখাস্ত করার ক্ষমতা দেওয়া হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে। এই সিদ্ধান্তকে দমনমূলক বলে উল্লেখ করে তিনদিন ধরে লাগাতার কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা। একইসঙ্গে বেতন বাড়ানোর দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছেন।


এর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুটি বিভাগ গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এনবিআর কর্মীদের প্রতিবাদের মুখে সেটি রোববার প্রত্যাহার করে নেয় সরকার।


রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তখন আরও বাড়ে যখন একজন শীর্ষ ছাত্রনেতা দাবি করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে ঐক্যমত্য না হলে অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন। তবে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ স্পষ্টভাবে জানান, ইউনূস সরকার কোথাও যাচ্ছে না এবং তারা দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবেন।


অধ্যাপক ইউনূস জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন হতে পারে। অন্যদিকে বিএনপি ও এর মিত্ররা আগামী ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানও সাম্প্রতিক এক ভাষণে ডিসেম্বরেই নির্বাচন প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন, যা সরকারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করে।


শনিবার অধ্যাপক ইউনূস উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক করেন এবং বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রনেতাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।


প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “আমরা যুদ্ধাবস্থার মতো পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।” তিনি জানান, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চলছে এবং এই সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজছে সরকার।


এদিকে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন এই মাসে স্থগিত হওয়ায় দলটি আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।




thebgbd.com/NA