ঢাকা | বঙ্গাব্দ

সাবেক তিন সিইসি ও কমিশনারদের বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএনপি

বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার অভিযোগে সাবেক তিনজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে যাচ্ছে বিএনপি। দলটির সূত্র জানিয়েছে, আগামীকাল রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা দায়ের করা হবে।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ২১ জুন, ২০২৫
সাবেক তিন সিইসি ও কমিশনারদের বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএনপি ছবি : সংগৃহীত।

বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার অভিযোগে সাবেক তিনজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে যাচ্ছে বিএনপি। দলটির সূত্র জানিয়েছে, আগামীকাল রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা দায়ের করা হবে।

বিএনপি সূত্র জানায়, রোববার সকালে দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বর্তমান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেবেন। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষর থাকবে। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি দায়ের করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল সবচেয়ে বেশি সমালোচিত। তৎকালীন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ১৫৩টি আসনে ভোট ছাড়াই আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্রদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করে। বিএনপি ও অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ওই নির্বাচন বর্জন করে। মাত্র ১২টি দল নির্বাচনে অংশ নেয়ায় এর গণতান্ত্রিক বৈধতা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন ওঠে।

সেই কমিশনের সদস্য ছিলেন মোহাম্মদ আব্দুল মোবারক, মোহাম্মদ আবু হাফিজ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জাবেদ আলী এবং মো. শাহনেওয়াজ। নির্বাচন নিয়ে সমালোচনার মুখে কাজী রকিবউদ্দীন বলেন, “বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া দোষের কিছু নয়, এটি আইনে আছে।”

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও দলটির অভিযোগ, ওই নির্বাচনে আগের রাতেই ব্যালট পেপারে সিল মারা হয় এবং ভোট ডাকাতি চলে। এতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৮৮টি আসনে জয় পায়, আর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট মাত্র ৮টি আসনে জয়লাভ করে।

সেই সময়ের সিইসি কে এম নুরুল হুদা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ব্যাপক অনিয়মের পরও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেননি। কমিশনের বাকি সদস্যরা ছিলেন মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং (প্রয়াত) মাহবুব তালুকদার।

সর্বশেষ বিতর্ক ওঠে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনকে ঘিরে। ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি, ভোটের হার এবং স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। নির্বাচন কমিশন দুপুর ৩টা পর্যন্ত ভোটার উপস্থিতির হার ২৭.১৫% বললেও, এক ঘণ্টার ব্যবধানে তা ৪০% হয়ে যায় বলে জানানো হয়, যা নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

এই কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, মো. আনিছুর রহমান, মো. আলমগীর এবং বেগম রাশেদা সুলতানা।

বিএনপির দাবি, এই তিন কমিশনই আওয়ামী লীগপন্থী প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেছে এবং প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন, নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে। তারা যেসব নির্বাচন করেছে, তা ‘ডামি ভোট’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

thebgbd.com/NA