ফুটবলের ব্যস্ত সূচি, অতিরিক্ত প্রতিযোগিতা আর খেলোয়াড়দের সীমাহীন চাপ—এইসব নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে মুখ খুলে আসছেন ইয়ুর্গেন ক্লপ। লিভারপুল অধ্যায় শেষে এখন রেড বুলের গ্লোবাল ফুটবল প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তবে সরব অবস্থান থেকে পিছু হটেননি। সম্প্রসারিত ক্লাব বিশ্বকাপ ঘিরে এবার আরও কড়া সুরে সমালোচনা করলেন ক্লপ। নতুন সংস্করণটিকে তিনি আখ্যা দিয়েছেন ‘ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে আইডিয়া’ হিসেবে। পাশাপাশি খেলোয়াড়দের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এই জার্মান কোচ।
জার্মান এক পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্লপ বলেন, ‘খেলার বাইরের বিষয় নয়, আসল বিষয় খেলা নিজেই –আর সেই দিক থেকে দেখলে ক্লাব বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে সিদ্ধান্ত।’
তিনি আরো বলেন, ‘যারা কখনো মাঠের বাস্তবতার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, বা আর নেই–তারাই এসব ধারণা নিয়ে আসছেন। এতে বিশাল অঙ্কের অর্থ রয়েছে, কিন্তু সব ক্লাবই যে তা পায়, এমন নয়।’
খেলোয়াড়দের বিরতিহীন ব্যস্ততা নিয়ে ক্লপ বলেন, ‘গত বছর ছিল কোপা আমেরিকা ও ইউরো। এই বছর ক্লাব বিশ্বকাপ, আগামী বছর বিশ্বকাপ। এর মানে, খেলোয়াড়দের জন্য কোনো প্রকৃত বিশ্রামের সুযোগ নেই –না শারীরিকভাবে, না মানসিকভাবে।’
এই বছরের ক্লাব বিশ্বকাপ প্রথমবারের মতো ৩২ দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই টুর্নামেন্টে ম্যাচ সংখ্যা ৪৮টি। মাত্র কয়েকদিন আগে খেলোয়াড়দের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গ্লোবাল ফুটবলারদের সংগঠন ‘ফিরফো’ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। যেখানে বলা হয়, খেলোয়াড়দের অন্তত চার সপ্তাহের অফ-সিজন বিশ্রাম দেওয়া উচিত। ম্যানচেস্টার সিটির মিডফিল্ডার রদ্রি সেপ্টেম্বরে বলেছিলেন, অতিরিক্ত ম্যাচের কারণে খেলোয়াড়রা প্রায় ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। তার সতীর্থ মানুয়েল আকাঞ্জি তো বলেই দিয়েছেন, এমন চলতে থাকলে তিনি ৩০ বছরেই অবসর নিতে বাধ্য হবেন।
ক্লপ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি ভয় পাচ্ছি, খেলোয়াড়দের এমন ধরনের চোট হবে, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। যদি আগামী মৌসুমে না-ও হয়, তাহলে সেটা বিশ্বকাপে বা তার পরেই হবে। আমরা বারবার তাদের বলি প্রতিটি ম্যাচ যেন জীবনের শেষ ম্যাচের মতো খেলো– বছরে ৭০-৭৫ বার! এটা আর চলতে পারে না।’
তিনি সতর্ক করেন, ‘যদি আমরা খেলোয়াড়দের বিশ্রাম না দিই, তাহলে তারা পারফর্ম করতে পারবে না –আর যদি তারা সেরা পারফরম্যান্স দিতে না পারে, তাহলে গোটা খেলাটার মান পড়ে যাবে।’
thebgbd.com/NIT