ভারতের উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে ১২৬০০ ফুট উঁচুতে ব্যাপক বৃষ্টি হয়। তারপর সেই বৃষ্টির পানির চাপে হড়পা বান ধসে আকস্মিক বন্যায় ভেসে গেছে উত্তরকাশীর ধারালী গ্রাম ও হর্ষিল উপত্যকা। মাত্র ৩০ সেকেন্ডেই লন্ডভন্ড হয়ে যায় গোটা এলাকা।
পাহাড় থেকে নেমে আসা স্রোতের সঙ্গে আসতে থাকে বিশাল বিশাল পাথর, বোল্ডার আর কাদা। আর তাতে একের পর এক বাড়ি, হোটেল নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) এমনই এক ভয়ংকর দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছেন স্থানীয়রা।
পাহাড়ের কোলে গড়ে ওঠা ধারালী গ্রাম পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের জায়গা। সেটি এখন যেন এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। হোটেল, হোমস্টে, রেস্তোরাঁয় সাজানো গ্রামটিতে এখন শুধু পানি আর কাদার স্রোত বইছে।
জানা গেছে, শুধু ধারালী গ্রামই নয়, সুখী টপেও ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। ফলে পরপর দুইবার ভারী বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হয়ে ওঠে। ক্ষীরগঙ্গা হয়ে হড়পা বান ধসে যাওয়ায় বোল্ডার আর কাদার স্রোত ভাগীরথীর প্রবাহ রুখে দিয়েছে। ফলে নদীর পাশে একটি অস্থায়ী ঝিলের জন্ম হয়েছে। যা আরও বড় আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও জানা গেছে, পাহাড় থেকে নেমে আসা পাথর, কাদার স্রোত ১৩.৫ একর এলাকাকে গ্রাস করে ভাগীরথীতে নিয়ে গিয়ে ফেলেছে। পাহাড় থেকে ক্ষীরগঙ্গা ধরে নেমে আসা হড়পা বানের পথে বাঁক থাকায় সেটি বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে হড়পা বানের গতিপথ বদলে যায়। ভাগীরথীর ধারে রয়েছে হর্ষিল হেলিপ্যাড, সেনা ছাউনি, ধারালী গ্রাম, কল্প কেদার মন্দির। হড়পা বানে সেনা ছাউনি, হেলিপ্যাড, ধারালী গ্রাম প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
উত্তরকাশীর হর্ষিল উপত্যকায় ধারালী গ্রাম। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯০০৫ ফুট উঁচুতে এই গ্রাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য খুবই জনপ্রিয়। হর্ষিল ও গঙ্গোত্রীর এই গ্রামের অবস্থান। হর্ষিল থেকে দূরত্ব ৭ কিলোমিটার। উত্তরকাশী থেকে ধারালী যেতে সময় লাগে আড়াই থেকে ৩ ঘণ্টা। গ্রামটি উত্তরকাশী জেলার ভটবারী তহসিলের অন্তর্গত। ২০১১ সালের জনশুমারির তথ্য অনুযায়ী, এই গ্রামে ১৩৭ পরিবারের বসবাস। জনসংখ্যা সবমিলিয়ে ৫৮৩ জন।
সূত্র : আনন্দবাজার
thebgbd.com/NIT