ঢাকা | বঙ্গাব্দ

এই সরকার দুর্নীতিকে কোথাও প্রশ্রয় দিচ্ছে না : দুদক চেয়ারম্যান

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ১১ আগস্ট, ২০২৫
এই সরকার দুর্নীতিকে কোথাও প্রশ্রয় দিচ্ছে না : দুদক চেয়ারম্যান ফাইল ছবি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, এই সরকার দুর্নীতিকে কোথাও প্রশ্রয় দিচ্ছে না। এরমধ্যে আপনারা শুনেছেন উপদেষ্টাদের কথাও কেউ কেউ বলেছেন। সেক্ষেত্রে যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করে থাকে তাহলে আমরা কাউকেই ছাড় দেব না। আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগগুলো তদন্ত করে একটা একটা করে দেখবো এবং আমাদের কার্যক্রম আপনাদের সহায়তায় সঠিকভাবে চালিয়ে যাব।


সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুর ২টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত দুদকের গণশুনানি শেষে দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন এসব কথা বলেন। এ গণশুনানিতে জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক আফরোজা আকতার চৌধুরী মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।


এসময় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, যখন দুর্নীতির খবর আসে, আমরা প্রথম সুনির্দিষ্ট অভিযোগ মিডিয়ার মাধ্যমে পেয়ে থাকি এবং সেটাকে আমরা আমলে নিয়ে বিবেচনা করে থাকি। জয়পুরহাটের গণশুনানিতে আপনাদের উপস্থিতি অত্যন্ত আশাবাঞ্জ্যক মনে হয়েছে। আমরা এখানে বিভিন্ন ধরনের যে খতিয়ান আমরা পেয়েছি এর বেশ কিছু আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান দিতে পেরেছি। আর যেগুলো আইন-আদালতের বিষয়, বিচারাধীন সেগুলো বিষয়ে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে এবং একটা সময়ে এগুলো সমাধান হবে।


ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, এখানে (জয়পুরহাট) পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে সেরকম বড় কোনো অভিযোগ নেই। এখানে যে নিয়োগগুলো হচ্ছে, এগুলো ভালোভাবে হচ্ছে। এগুলো স্বাক্ষ্য আপনারা নিজেরাই দিয়েছেন। আমি মনে করবো বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় যদি দুর্নীতির স্কেলে মাপতে যাই, জয়পুরহাট অত্যন্ত ভালো অবস্থানে রয়েছে। আপনারা চেষ্টা করলে এটিকে ধরে রাখতে পারবেন এবং জয়পুরহাটকে বাংলাদেশের অন্য অনেক জেলার আগে আপনারা ঘোষণা করতে পারবেন এটি একটি দুর্নীতিমুক্ত জেলা।


তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে অনেক ধরনের দুর্নীতি আছে, সবগুলো দুর্নীতি আমাদের আওতাভুক্ত না। আর তাৎক্ষণিকভাবে বিচার করা, এটি করবে কোর্ট, এটি আমাদের কাজ না। দুদক বিচারের জন্য একটি পদ্ধতি তৈরি করে একটি জায়গায় নিয়ে যায়, তারপর কোর্টে দেয়। কাজেই দুদকের কার্যপরিধির বাইরে যাওয়ার আমাদের সুযোগ নেই।


দুদক আয়োজিত এ গণশুনানি সোমবার সকাল ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে শুরু হয়। এতে জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি সহযোগিতা করে। গণশুনানিতে বিআরটিএ, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, গণপূর্ত, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জয়পুরহাট চিনিকল, জেলা পরিষদ, জয়পুরহাট পৌরসভা, এলজিইডি, থানা, পুলিশ, জেলখানা, ভূমি অফিস, নেসকো, ইউনিয়ন পরিষদ, সমাজসেবা, বীমা কোম্পানিসহ সরকারি-বেসরকারি ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৭৯টি দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়।


এসবের মধ্যে দুদকের তফসিলভুক্ত ৬৭টি অভিযোগের শুনানি হয়। গণশুনানিতে সেবা গ্রহিতা ও সেবা দাতা উভয়ে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। দুদক চেয়ারম্যান উভয়ের কথা শোনেন। দুদক চেয়ারম্যান তাৎক্ষণিকভাবে কয়েকটি অভিযোগ সমাধান করেন। দুটি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদক আমলে নেন। আর অন্য অভিযোগগুলো বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেন। দুদকের এই গণশুনানি নিয়ে অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।


গণশুনানিতে অংশ নেওয়া জয়পুরহাট হাউজিং এস্টেট এলাকার আব্দুল হাকিম বলেন, জয়পুরহাট হাউজিং এস্টেট ব্লক-বি প্লট নম্বর ২৪ সামনে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য আবেদন করেছিলাম। দীর্ঘ ৭-৮ বছরে কোথাও সমাধান হয়নি। আমি দুদকের গণশুনানিতে অংশ নিয়েছিলাম। গণশুনানিতে কোনো সঠিক সমাধান পাইনি।


জয়পুরহাট সদর উপজেলার ৭ নম্বর বম্বু ইউনিয়নের বাসিন্দা আতাউর রহমান বলেন, দুদকের গণশুনানিতে অংশ নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম গণশুনানিতে ভালো সমাধান পাবো। কিন্তু সেটি হয়নি।


গণশুনানিতে অন্যদের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ ও গণসচেতনতা) মো. আক্তার হোসেন, রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক মো. ফজলুল হক, জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব, দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় নওগাঁর উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রমুখ অংশ নেন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।


thebgbd.com/NIT