বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা ও যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির কারণে চলতি বছরের বাকি সময়ের জন্য অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ম্লান হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে সিঙ্গাপুর সরকার। আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সতর্কতার কথা জানায়। যদিও দেশটি ২০২৫ সালের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়িয়েছে। সিঙ্গাপুর থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল এবং শুল্কের কারণে সৃষ্ট যেকোনো বৈশ্বিক মন্দার ঝুঁকিতে রয়েছে। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১০ শতাংশ বেসলাইন শুল্কের মুখোমুখিও হতে হচ্ছে দেশটিকে। নগর-রাষ্ট্রটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোপূর্বে দেয়া ০ থেকে ২.০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়িয়ে ১.৫ থেকে ২.৫ শতাংশ করেছে।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এটি মূলত ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে সিঙ্গাপুরের অর্থনীতির প্রত্যাশার চেয়ে ভালো পারফরম্যান্সের প্রতিফলন। তবে তারা সতর্ক করে জানিয়েছে, বছরের বাকি সময়ে অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি অনিশ্চিত রয়ে গেছে এবং ঝুঁকি নিম্নমুখী প্রবণতার দিকে। এটি এসেছে এমন এক সময়ে যখন চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থনীতি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আগের তিন প্রান্তিকে ৪.১ শতাংশ ছিল।
মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়েছে, ওষুধ পণ্য এবং সেমিকন্ডাক্টরের উপর সেক্টরাল শুল্কের সময় এবং ব্যাপ্তিসহ মার্কিন বাণিজ্য নীতির ‘অনির্দিষ্টতার’ কারণে বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গি এখনও ভঙ্গুর রয়েছে। এদুটো পণ্যই সিঙ্গাপুরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি। গত সপ্তাহে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ না করা কোম্পানির চিপ আমদানিতে ১০০ শতাংশ শুল্ক এবং ওষুধ আমদানিতে সর্বোচ্চ ২৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, বছরের দ্বিতীয়ার্ধে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রথমার্ধের তুলনায় মন্থর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে, উৎপাদন খাতের প্রবৃদ্ধি আগামী কয়েক প্রান্তিকে দুর্বল হতে পারে, কারণ, মার্কিন শুল্কনীতি বৈশ্বিক চাহিদায় চাপ সৃষ্টি করবে।
একইভাবে পাইকারি বাণিজ্য খাতও শীতল হতে পারে, কারণ আঞ্চলিক অগ্রিম পণ্য মজুদের প্রবণতা হ্রাস পাচ্ছে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য দুর্বল হচ্ছে। এর সঙ্গে শিপিং ও বিমান কার্গো সেবার চাহিদা কমে গেলে পরিবহণ ও সংরক্ষণ খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ‘দেশীয় ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখবে এবং প্রয়োজনে বছরের মাঝে পূর্বাভাসে পরিবর্তন আনবে।’ এই অঞ্চলে ফ্রন্ট-লোডিং কার্যক্রম হ্রাস এবং বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য মন্দা হওয়ার পাশাপাশি পাইকারি বাণিজ্য খাতও একইভাবে শীতল হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে, অন্যদিকে শিপিং এবং বিমান কার্গো পরিষেবার চাহিদা হ্রাস পরিবহণ এবং সংরক্ষণ খাতকে প্রভাবিত করতে পারে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ‘বিশ্বব্যাপী ও দেশীয় অর্থনীতির উন্নয়নগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে এবং প্রয়োজনে সারা বছর ধরে পূর্বাভাস হালনাগাদ করবে।’
সূত্র: এএফপি
এসজেড