মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের লেখা একটি চিঠি আলাস্কার শীর্ষ বৈঠকে ট্রাম্প পুতিনকে বিশেষ উপহার হিসেবে দিয়েছেন। চিঠিতে শিশুদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে পুতিনকে শান্তির পথে হাঁটার আহ্বান জানানো হয়েছে। ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
শনিবার ফার্স্ট লেডির দপ্তর ফক্স নিউজের একটি প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ শেয়ার করে। সেখানে প্রকাশিত হয় ওই সংক্ষিপ্ত চিঠিটি। এর একদিন আগেই আলাস্কার বৈঠকে ট্রাম্প ও পুতিন ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে কোনো অগ্রগতি ছাড়াই আলোচনা শেষ করেন। ফক্স নিউজের খবরে বলা হয়, ট্রাম্প যখন পুতিনকে চিঠিটি দেন, তখনই তিনি সেটি পড়ে ফেলেন। দুই দেশের প্রতিনিধি দল সেই মুহূর্তে উপস্থিত ছিল।
চিঠিতে লেখা ছিল, ‘আজকের পৃথিবীতে কিছু শিশু চারপাশের অন্ধকারের কারণে নীরবে হাসি চাপতে বাধ্য হচ্ছে।’ তবে ফার্স্ট লেডির সই করা ওই চিঠিতে ইউক্রেনের নাম উল্লেখ করা হয়নি। চিঠিতে আরও লেখা ছিল, ‘মি. পুতিন, আপনি চাইলে একাই তাদের হাসি ফিরিয়ে দিতে পারেন। শিশুদের নিষ্পাপতা রক্ষার মাধ্যমে আপনি শুধু রাশিয়ার সেবাই করবেন না, মানবতার সেবাও করবেন।’ চিঠির আরেক অংশে বলা হয়, ‘এমন সাহসী চিন্তা মানুষে মানুষে সব বিভাজন মুছে দেয়। আর মি. পুতিন, আপনার কলমের এক আঁচড়ে তা বাস্তবায়ন হতে পারে। এখনই সময়।’
জুলাইয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, স্লোভেনিয়ায় জন্ম নেওয়া তার স্ত্রী পুতিন সম্পর্কে তার চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করতে সাহায্য করেছেন। ট্রাম্প বলেন, ‘যখন বাড়ি গিয়ে ফার্স্ট লেডিকে বললাম, ‘জানো, আজ পুতিনের সঙ্গে কথা বললাম, আমাদের দারুণ কথা হয়েছে’। তখন তিনি বলেন, ‘ওহ, তাই? কিন্তু আজ তো আবার একটি শহরে হামলা হয়েছে।’
দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প পুতিনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করবেন। দায়িত্বের শুরুর দিকে ট্রাম্প ইউক্রেনকে দায়ী করেন চুক্তি না হওয়ার জন্য। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুতিনের অব্যাহত হামলা নিয়েও তিনি হতাশা প্রকাশ করেন।
আলাস্কার বৈঠকের আগে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছিলেন, যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হলে রাশিয়াকে ‘কঠোর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে। তবে বৈঠক শেষে তিনি যুদ্ধবিরতির দাবি বাদ দিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধ শেষ করার একমাত্র উপায় হলো সরাসরি শান্তিচুক্তি।’ পুতিন দীর্ঘদিন ধরে চূড়ান্ত শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা করার পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছেন। তবে ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা বলেছে, এটি আসলে সময় নষ্ট করার কৌশল, যাতে রাশিয়া আরো সামরিক অগ্রগতি অর্জন করতে পারে।
সূত্র: এএফপি
এসজেড