গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের জন্য সব ধরনের অস্থায়ী ভিসা কার্যক্রম স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, চিকিৎসা ও মানবিক সহায়তার জন্য দেওয়া ভিসা অনুমোদনের প্রক্রিয়া পুনঃমূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, গাজার বাসিন্দাদের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে চিকিৎসা ও মানবিক কারণে যেসব ভিসা সাম্প্রতিক সময়ে দেওয়া হয়েছে, তার পদ্ধতি এখন ‘পূর্ণাঙ্গ ও পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনার’ আওতায় আনা হয়েছে। এই পর্যালোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে আর কোনো ভিসা দেওয়া হবে না।
সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বর্তমানে সীমিতসংখ্যক গাজাবাসীকে চিকিৎসা ও মানবিক কারণে অস্থায়ী ভিসা দেওয়া হচ্ছে, তা পুনরায় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই পর্যালোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভিসা কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। পররাষ্ট্র দপ্তরের দাবি, চলতি সময়ের মধ্যে ‘অল্প সংখ্যক’ গাজাবাসীকে মানবিক বিবেচনায় ভিসা দেওয়া হয়েছে। তবে কতজনকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সেই সংখ্যা স্পষ্ট করা হয়নি।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের মে মাসে ফিলিস্তিনি অথরিটি ট্রাভেল ডকুমেন্টধারী প্রায় ৬৪০ জন নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা দেওয়া হয়। এসব ভিসার বেশির ভাগই ছিল B1/B2 শ্রেণির—যা মূলত ভিজিট এবং চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়।
তবে এই সিদ্ধান্তের পেছনে সরাসরি একটি রাজনৈতিক ঘটনা ভূমিকা রেখেছে বলে জানা যাচ্ছে। ঘটনার সূত্রপাত হয় শুক্রবার, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সমর্থক এবং ডানপন্থি অ্যাক্টিভিস্ট লরা লুমার সামাজিক মাধ্যমে দাবি করেন—গাজার বাসিন্দা কয়েকজন ফিলিস্তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন।
তিনি জানান, ওইসব ব্যক্তি সান ফ্রান্সিসকো ও হিউস্টন হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন এবং পরবর্তীতে মিসৌরিতে অবস্থান করছেন। তিনি আরও দাবি করেন, এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে কয়েকজন মার্কিন কংগ্রেস সদস্য এবং সিনেটর তাকে বার্তা পাঠিয়েছেন।
লুমারের এই পোস্ট যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকানদের মধ্যে বিতর্ক ও ক্ষোভ উসকে দেয়। টেক্সাসের রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান চিপ রয় জানান, বিষয়টি তিনি গভীরভাবে অনুসন্ধান করবেন। অপরদিকে ফ্লোরিডার আরেক রিপাবলিকান নেতা র্যান্ডি ফাইন এই ঘটনাকে ‘জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকি’ বলে মন্তব্য করেন।
সূত্র: রয়টার্স
এসজেড