লস অ্যাঞ্জেলেসের আশপাশে দাবানলের আগুন যখন বিপদজনক হয়ে ওঠে তখন ৪০ বছরেরও বেশি সেখানে বসবাসকারী জেনিল গ্রাস তার বাড়ি থেকে বের হতে বাধ্য হন। কিন্তু পঁচিশটি ঘোড়াসহ অন্যান্য প্রাণীর দেখভালের দায়িত্ব প্রাপ্ত বিশাল এক ফার্মের ম্যানেজার জেনেল গ্রাস বুঝতে পারেন, বিষয়বস্তু জটিল হতে চলেছে।
জ্বলন্ত অঙ্গারগুলো চারপাশে একশ মাইল গতিতে ঘুরছে এবং মানুষজন যে যার গাড়িতে উঠে আগুন প্রবন এলাকা ছেড়ে যাচ্ছে, ঠিক তখন জেনিলকে পঁচিশটি ভীত সন্ত্রস্ত ঘোড়াকে আগুন থেকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করতে হয়েছে। তিনি বলেন, খামার থেকে যখন আমরা শেষ ঘোড়াটি বের করি তখন তার অবস্থা খুব খারাপ। লস অ্যাঞ্জেলেসের ঘোড়া পরিচর্যা কেন্দ্রে এএফপিকে এ কথা বলেন জেনিল গ্রাস। তিনি বলেছেন, জায়গাটা ছিল ধোয়াচ্ছন্ন, অন্ধকার। বুঝতে পারছিলাম না কোথায় আছি। অবুঝ প্রাণীদের খামার থেকে বের করার কাজটি বেশ কঠিন। এক পর্যায়ে মনে হয়েছে ঘোড়াটিকে জীবন্ত বের করতে পারব না।
দেড় লাখেরও বেশি মানুষ লস অ্যাঞ্জেলেসের এই দাবানলের কারণে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। চলমান এই দাবানল এখন পর্যন্ত অন্তত ১৬ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এই দাবানল পুরো লস অ্যাঞ্জেলেসের অবয়বই বদলে দিয়েছে। অসংখ্য মানুষকে তাদের বাড়িঘর, শহর ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। যাদের পোষা প্রাণীগুলোরও স্থানান্তর প্রয়োজন।
এরকম কিছু আমরা কখনো দেখিনি, বলেছেন লস এঞ্জেলসের ঘোড়া পরিচর্যা কেন্দ্রের অবকাঠামো পরিচালক জেনি নেভিন। প্রথম রাতটা ছিল বিশৃংখলায় পূর্ণ। চারপাশ থেকে মানুষ আসছিল। শনিবার পরিচর্যা কেন্দ্রটির চারপাশে কয়েক ডজন মানুষ জড়ো হয়। যেখানে গাধা, শূকর এবং টাট্টু ঘোড়াও আশ্রয় পায়।
লস অ্যাঞ্জেলেসের বিস্তৃত এলাকাজুড়ে দাবানলে যেসব পশু আশ্রয়স্থল হারিয়েছে সেগুলো উদ্ধার করতে এবং চিকিৎসা দিতে কর্মী, পশু চিকিৎসক এবং স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন। প্যাসাডেনার হিউম্যান সোসাইটি এরই মধ্যে চারশোরও বেশি প্রাণীর দেখভালের দায়িত্ব পেয়েছে। এসব প্রাণীরা এসেছে আলতাদেনা থেকে, যেখানে দাবানল ১৪ হাজার একরেরও বেশি ভূমি গ্রাস করে ফেলেছে। সেখানে তারা পাঁচ দিন বয়সি একটা কুকুরের বাচ্চাও তারা পেয়েছে। বাচ্চাটিকে একটি ভবনের ধ্বংসস্তুপের মধ্যে পাওয়া যায়। যার একটি কান পুড়ে গেছে।
সূত্র: গার্ডিয়ান
এসজেড