গত বছর জুলাইয়ে লর্ডসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট খেলেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দেন জেমস অ্যান্ডারসন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক এরপর ঘরোয়া পর্যায়েও আর কোনো ম্যাচ খেলেননি। অনেকেই ভেবেছিল ঘরোয়া ক্রিকেটেও হয়ত আর দেখা যাবে না এই কিংবদন্তিকে। কিন্তু এখনই পেশাদার ক্যারিয়ারের ইতি টানছেন না ৪২ বছর বয়সী অ্যান্ডারসন। পেশাদার ক্যারিয়ার আরও লম্বা করতে চলেছেন তিনি।
দীর্ঘ ১ দশক পর ফের টি-টোয়েন্টি খেলতে যাচ্ছেন জেমস অ্যান্ডারসন। যে কারণে কাউন্টি দল ল্যাঙ্কাশায়ারের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়াতে রাজি হয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটে পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি।
গত জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর পরামর্শক হিসেবে ইংল্যান্ডের কোচিং প্যানেলে যোগ দিয়েছিলেন অ্যান্ডারসন। তবে আরও ক্রিকেট খেলার ইচ্ছার কথা জানিয়ে সেই দায়িত্ব থেকে দ্রুতই সরে এসেছিলেন তিনি। আইপিএলে খেলার ইচ্ছা থেকে গত ডিসেম্বরের মেগা নিলামে নামও দিয়েছিলেন এই ইংলিশ কিংবদন্তি। তবে নিলামে কোনো দলই তার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেনি। এবার ইংল্যান্ড ও ওয়েলশ ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) কেন্দ্রীয় চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ এবং টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টের জন্য ল্যাঙ্কাশায়ারের সঙ্গে চুক্তি করেছেন অ্যান্ডারসন।
অ্যান্ডারসন এ ব্যাপারে বলেন, 'ল্যাঙ্কাশায়ারের সঙ্গে এই চুক্তি করতে পেরে এবং আগামী মৌসুমেও পেশাদার ক্রিকেট খেলার সুযোগ পেয়ে আমি দারুণ উত্তেজিত। এই ক্লাবটি আমার জীবনের বড় একটা অংশজুড়ে আছে, যখন আমি তরুণ ছিলাম তখন থেকেই, তাই লাল গোলাপ (ল্যাঙ্কাশায়ারের লোগো) ফের গায়ে তোলার এবং দলটিকে লাল এবং সাদা বলের ক্রিকেটে সাহায্য করার সুযোগ পাওয়ার পর আমি সত্যিই সামনে তাকানোর কথা ভাবছি।'
অ্যান্ডারসন আরও বলেন, 'আমি আমার ফিটনেস লেভেল উঁচুতে রাখতে কঠোর পরিশ্রম করছি এবং শীতজুড়ে ইংল্যান্ডের কোচের দায়িত্ব পালন করার সময় নিয়মিত বল করেছি, এপ্রিলে কাউন্টি মৌসুম শুরু হলে যেন মাঠে দৌড়াতে পারি সেই লক্ষ্য রেখে।'
এই গ্রীষ্মে ৪৩ বছর পূর্ণ করতে যাওয়া অ্যান্ডারসনের সঙ্গে ল্যাঙ্কাশায়ারের সম্পর্কের শুরু প্রায় সিকি শতাব্দী আগে, ২০০১ সালে। গত মৌসুমে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে মাত্র একটি ম্যাচ খেললেও ক্লাবের পক্ষে গড়ের দিক দিয়ে তিনিই সেরা। সাউথপোর্টে নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে মাত্র ৬৪ রানে ৮ উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি।
২০১৪ সালে ভাইটালিটি ব্লাস্টে শেষবারের মতো টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন অ্যান্ডারসন। ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে আইপিএলসহ বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগে খেলতে চান তিনি।
ল্যাঙ্কাশায়ারের ডিরেক্টর অব ক্রিকেট পারফরম্যান্স মার্ক চিলটন বলেন, 'আমরা জিমির আন্তর্জাতিক অবসর গ্রহণের পরপরই তার সঙ্গে খোলামেলা আলাপ করেছি এবং শুরু থেকেই আমাদের অবস্থান স্পষ্ট ছিল। ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত সকলের জন্য এটি দারুণ খবর যে তিনি তার খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার ল্যাঙ্কাশায়ারের সঙ্গে চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।'
অ্যান্ডারসন এই মুহূর্তে জাতীয় দলের সঙ্গে আবুধাবিতে অবস্থান করছেন। ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের সাদা বলের সিরিজ সামনে রেখে তিনি দলের কোচিং স্টাফের অংশ হিসেবে আছেন। টেলএন্ডার পডকাস্টে তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তানের মাটিতে আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে থাকবেন তিনি।
thebgbd.com/NIT