২০২৪ সালটি বিশ্বের বিলিয়নেয়ারদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য বছর ছিল, যেখানে তাদের ব্যবসা বেড়েছে এবং ভাগ্যদেবির ছোঁয়ায় কোষাগার ফুলে ফেপে উঠেছে। ফোর্বস অনুসারে, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের শীর্ষ দশজন তাদের সমষ্টিগত সম্পদে ৭৩০ বিলিয়ন বা ৭০ হাজার তিনশো কোটি ডলারেরও বেশি যোগ করেছেন।
ফোর্বসের তালিকা অনুযায়ী ২০২৪ সালে সবচেয়ে বেশি সম্পদ অর্জনকারী ১০ বিলিয়নিয়ারদের ওপরে একটু নজর দেওয়া হলো।
এক) ইলন মাস্ক
সম্পদের উৎস: টেসলা, স্পেসএক্স, এক্স, নিউরালিক, বোরিং কো
সম্পদের পরিমাণ: ৪৩৯ বিলিয়ন ডলার (+১৮৮.১ বিলিয়ন ডলার)
২০২৪ সালে সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ইতিহাসের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে চারশ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সম্পদের অধিকারী হয়েছেন। এরমধ্যে স্পেসএক্সের মূল্যায়ন সাড়ে তিনশ বিলিয়ন এ পৌঁছে যাওয়ায় তার ভাগ্যে এই অসাধারণ মাইলফলকটি এসেছে। পাশাপাশি টেসলার শেয়ারের মূল্য বেড়েছে ৬৮ শতাংশ। প্রযুক্তির বাইরেও মাস্কের প্রভাব প্রসারিত হয়েছে। গেল বছরে তিনি মার্কিন রাজনীতিতে একজন বিশেষ ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারে খরচ করেছেন দুইশ মিলিয়ন ডলার। একটি নতুন সরকারী উপদেষ্টা পরিষদের সহ-সভাপতিও হয়েছেন।
দুই) মার্ক জুকারবার্গ
সম্পদের উৎস: মেটা (ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ)
সম্পদের পরিমাণ: ২১৪.৪ বিলিয়ান ডলার (+৯১.৮ বিলিয়ন ডলার)
২০২২ সালে উল্লেখযোগ্য লোকসানের পর, ২০২৪ সালে দারুন ভাবে ব্যবসায় ফিরে আসেনজুকারবার্গ। এই বছর মেটার শেয়ার ৬৭ শতাংশ বেড়েছে। যা তাকে ২০০ বিলিয়ন ডলারের মালিক হওয়া ইতিহাসের চতুর্থ বিলিয়নিয়ার হতে সাহায্য করে।
তিন) ল্যারি এলিসন
সম্পদের উৎস: ওরাকল
সম্পদের পরিমাণ: ২১৮.৩ বিলিয়ান ডলার (+৮৪.৫ বিলিয়ন ডলার)
ওরাকলের শেয়ার ৬৮ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় ওরাকলের চেয়ারম্যান এবং সিটিও (চিফ টেকনোলজি অফিসার) ল্যারি এলিসন তার সম্পদের বিশাল বৃদ্ধি দেখেছেন। যা তাকে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তিতে পরিণত করেছে।
চার) জেনসেন হুয়াং
সম্পদের উৎস: এনভিডিয়া
সম্পদের পরিমাণ: ১১৭.২ বিলিয়ান ডলার (+৭৪.৩ বিলিয়ন ডলার)
এনভিডিয়ার এআই চিপগুলি ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বেড়েছে অবিশ্বাস্য ১৮৫% বেড়েছে যা এনভিডিয়ার সিইও হুয়াংকে প্রথমবারের মতো বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী ব্যক্তির তালিকায় যোগ হতে সাহায্য করেছে।
পাঁচ) জেফ বেজোস
সম্পদের উৎস: আমাজন
সম্পদের পরিমাণ: ২৪১.২ বিলিয়ান ডলার (+৬৮.৯ বিলিয়ন ডলার)
অ্যামাজনের স্টক ২০২৪ সালে ৫৩ শতাংশ বেড়েছে, যা বেজোসের সম্পদে প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার যোগ করেছে। কৌশলগত কারণে শেয়ার বিক্রি এবং ফ্লোরিডায় চলে যাওয়ায় বেজোসের আনুমানিক এক বিলিয়ন ট্যাক্স বেঁচে গেছে।
ছয়) মাইকেল ডেল
সম্পদের উৎস: ডেল টেকনোলজিস, ব্রডকম
সম্পদের পরিমাণ: ১১৫.৩ বিলিয়ান ডলার (+৪৬.৬ বিলিয়ন ডলার)
ব্রডকমের সাথে ভিএমওয়্যার একীভূত হওয়ার ফলে ডেলের সম্পদ বেড়েছে। দুই প্রতিষ্ঠানেই তার শেয়ার তার সম্পদকে আরও ফাপিয়ে তুলেছে। পাশাপাশি ডেল টেকনোলজিসের শেয়ারও ৫০ শতাংশ বেড়েছে।
সাত) রব ওয়াল্টন
সম্পদের উৎস: ওয়ালমার্ট
সম্পদের পরিমাণ: ১১২.৫ বিলিয়ান ডলার (+৪৬.৫ বিলিয়ন ডলার)
আট) জিম ওয়াল্টন
সম্পদের উৎস: ডেল টেকনোলজিস, ব্রডকম
সম্পদের পরিমাণ: ১১১.৩ বিলিয়ান ডলার (+৪৪.৫ বিলিয়ন ডলার)
নয়) অ্যালিস ওয়াল্টন
সম্পদের উৎস: ওয়াল্টন
সম্পদের পরিমাণ: ১০৩.৫ বিলিয়ান ডলার (+৪১.৭ বিলিয়ন ডলার)
ওয়ালমার্টের স্টক 2024 সালে প্রায় ৮০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় ওয়ালটন ভাইবোনরা তাদের সম্পদের এই বিশাল বৃদ্ধি পেয়েছে। ই-কমার্স এবং পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিও তাদের সম্পদ বৃদ্ধির আরেকটি কারণ। এ বছর বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী হয়েছেন অ্যালিস ওয়ালটন।
দশ) ল্যারি পেজ
সম্পদের উৎস: গুগল
সম্পদের পরিমাণ: ১৫৬.৬ বিলিয়ান ডলার (+৪০.৫ বিলিয়ন ডলার)
গুগলের শেয়ার ৩০ শতাংশের বেশি বেড়ে যাওয়ায় পেজের সম্পদ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২৪ সালের শীর্ষ ১০ সফল আয়কারীদের মধ্যে সাতজনই এসেছেন প্রযুক্তি খাত থেকে। যা ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে এআই-এর সুস্পষ্ট আধিপত্য প্রদর্শন করে। মাস্কের নেতৃত্বে, এই বিলিয়নেয়াররা একটি ক্রমবর্ধমান বাজারে সম্ভাব্য আর্থিক লাভের ইঙ্গিত দেয়।
সূত্র: ফোর্বস
এসজেড