যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা এবং টেক্সাস রাজ্যে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত দুই ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার প্রাণঘাতী ইনজেকশনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। যার মধ্যে একজন ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে মৃত্যুদণ্ডের সাজা ভোগ করেছেন।
৬৪ বছর বয়সী জেমস ফোর্ডকে ১৯৯৭ সালে গ্রেগ এবং কিম্বার্লি ম্যালনোরিকে হত্যার জন্য ১৯৯৯ সালে ফ্লোরিডায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। গ্রেগ এবং কিম্বার্লি ম্যালনোরি একজন ছোট বাচ্চার বাবা-মা ছিলেন এবং পুন্টা গোর্দা শহরের একটি টার্ফ ফার্মে জেমসের সঙ্গে কাজ করতেন। রাজ্যের সংশোধন বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৯ মিনিটে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
আদালতের নথি অনুসারে, জেমস ফোর্ড ২৫ বছর বয়সী গ্রেগ ম্যালনোরির মাথায় গুলি করে এবং গলা কেটে হত্যা করে। তার ২৬ বছর বয়সী স্ত্রীকে ধর্ষণ, রক্তাক্ত ও গুলি করে হত্যা করা হয়। পরের দিন ফার্মের একজন কর্মচারী তাদের মৃতদেহ আবিষ্কার করেন।
এই দম্পতির ২২ মাস বয়সী মেয়েকে তাদের পিকআপ ট্রাকে গাড়ির সিটে ১৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বেঁধে রাখা হয় এবং পরে তাকে উদ্ধার করা হয়। আদালতের নথি অনুসারে, তার দেহ মশার কামড় এবং তার মায়ের রক্তে ঢাকা ছিল। জেমসকে প্রথমে হত্যা, স্ত্রীকে ধর্ষণ-হত্যা এবং শিশু নির্যাতনের দুটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
ফোর্ডের আইনজীবীরা মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করার চেষ্টা করেন এই যুক্তিতে, হত্যাকাণ্ডের সময় তার বয়স ৩৬ বছর হলেও, তার মানসিক বয়স ছিল ১৪ বছর বয়সী একজনের মতো। ২০০৫ সালের সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে ১৮ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিদের অপরাধ করলে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা নিষিদ্ধ করে। ফ্লোরিডা সুপ্রিম কোর্ট গত সপ্তাহে ফোর্ডের যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে। তিনি মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে শেষ আপিল দায়ের করেন। যা কোনও মন্তব্য ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করার জন্য তার আবেদন খারিজ করে দেয়।
২০০৪ সালে টেক্সাসের কিলিন শহরে স্ট্রিপ ক্লাবের মালিক মোহাম্মদ আমিন রাহমুনি এবং হাইথাম জায়েদ নামে আরেক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে বৃহস্পতিবার ৪৬ বছর বয়সী রিচার্ড টাবলারকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। টাবলার ক্লাবে ১৬ এবং ১৮ বছর বয়সী দুই কিশোর নৃত্যশিল্পীকে হত্যা করার কথাও স্বীকার করেন। কিন্তু তাদের মৃত্যুর জন্য কখনও বিচার করা হয়নি।
টাবলার তার ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে তার শেষ বিবৃতিতে ক্ষমা চাওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। টাবলারের বক্তব্য উদ্ধৃত করে টেক্সাসের অপরাধ বিচার বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়,তিনি বলেছেন যে ‘এমন একটি দিনও যায় না যখন আমার কর্মের জন্য অনুতপ্ত হই না’। টাবলার মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে তার আপিল প্রত্যাখ্যান করেন।
আলাবামা, দক্ষিণ ক্যারোলিনা, টেক্সাসে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর ফোর্ড এবং টাবলার ছিলেন এই বছর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চতুর্থ এবং পঞ্চম মার্কিন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি। যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর ২৫টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। দেশটির ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ২৩টিতে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করা হয়েছে। তিনটি রাজ্য - অ্যারিজোনা, ওহিও এবং টেনেসি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত করলেও সম্প্রতি তা পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
সূত্র: এএফপি
এসজেড
