ঢাকা | বঙ্গাব্দ

‘জ্যাক দ্য রিপার’র পরিচয় ফাঁস!

স্থানীয়রা ছুটে এসে দেখেন, রাস্তায় পড়ে রয়েছে ক্যাথরিনের রক্তাক্ত লাশ। ফালাফালা করে ছুরি দিয়ে চিরে দেওয়া তার পেট।
  • অনলাইন ডেস্ক | ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
‘জ্যাক দ্য রিপার’র পরিচয় ফাঁস! রাসেল এডওয়ার্ডস

১৮৮৮ সাল, রাতের অন্ধকারে ডুবেছে পূর্ব লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল। নিস্তব্ধ রাস্তা দিয়ে একলা ফিরছিলেন পেশায় যৌনকর্মী ক্যাথরিন এডোজ। হঠাৎ তাঁর সামনে এসে দাঁড়াল এক ছায়ামূর্তি, তার পরেই তীব্র চিৎকার। স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে দেখেন, রাস্তায় পড়ে রয়েছে ক্যাথরিনের রক্তাক্ত লাশ। ফালাফালা করে ছুরি দিয়ে চিরে দেওয়া তার পেট। ওই একই বছর প্রায় একই ভাবে খুন করা হয় আরও চার যৌনকর্মীকে।


স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের প্রাণপণ তদন্তের পরেও অধরা সেই হত্যাকারী, যার নাম দেওয়া হয় জ্যাক দ্য রিপার। এক সময় এ-ও দাবি করা হয়, ওই নামে আদতে কোনও খুনিই নেই। ১৩৭ বছর বাদে পরিচয় জানা গেছে তার, এমনই দাবি একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের। ব্রিটিশ ঐতিহাসিক ও লেখক রাসেল এডওয়ার্ডস সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ক্যাথরিন যেখানে খুন হয়েছেন, সেই জায়গা থেকে পাওয়া একটি শাল পরীক্ষা করে মিলেছে ডিএনএ। সেই ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, জ্যাক দ্য রিপার আসলে ২৩ বছরের পোলিশ শরণার্থী অ্যারন কসমিনস্কি। ১৮৮০ সালে সে লন্ডনে পা রাখে। পেশায় সে ছিল নাপিত।


প্রাথমিক ভাবে, ১৮৮৮ সালেই তদন্তের সময় অ্যারনের নাম উঠে আসে। তার বিরুদ্ধে ছিল একাধিক নারীবিদ্বেষের অভিযোগ। বিশেষ করে, যৌনকর্মীদের প্রতি ছিল তার অদ্ভুত রাগ। কিন্তু প্রমাণের অভাবে তাকে আটক করা যায়নি। পুলিশি তদন্তে খানিক পরেই মানসিক সমস্যার কারণে মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি হয় সে। ১৯১৯ সালে ৫৩ বছর বয়সে সেখানেই মৃত্যু হয় তার।


রাসেল জানিয়েছেন, ২০০৭ সালে নিলামে তিনি শালটি কেনেন। তারপর থেকেই রিপারের পরিচয় জানার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি। শালটি থেকে দুটি ডিএনএ পান তিনি। ক্যাথরিনের খুনের জায়গা থেকে শালটি মেলায় ক্যাথরিনের উত্তরসূরিকে খুঁজে তার সঙ্গে ডিএনএ দুটির নমুনা মেলান। একটির সঙ্গে মিলে যায়। সন্দেহ হওয়ায় অ্যারনের উত্তরসূরিকে খুঁজে তার সঙ্গে দ্বিতীয় ডিএনএ-টি মেলান রাসেল, এখানেও সাফল্য। অ্যারনের উত্তরসূরির সঙ্গে অবিশ্বাস্য মিল রয়েছে দ্বিতীয় ডিএনএ-র। তার পরেই তার স্থির বিশ্বাস, অ্যারনই জ্যাক দ্য রিপার।


যদিও রাসেলের দাবি খুব একটা মেনে নিচ্ছেন না বিশ্বের তাবড় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ। তাদের মতে, ১৩৭ বছর ধরে শালটি যথাযথ ভাবে সংরক্ষিত ছিল না। বহু মানুষের হাত ঘুরেছে সেটি। সুতরাং, ডিএনএ দিয়ে এভাবে হত্যাকারীর ‘আসল’ পরিচয় বের করার বিষয়টি ১০০ শতাংশ নিখাদ নয়, বরং তাতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।


সূত্র: বিবিসি


এসজেড