জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জুলাই ২০২৪-এর গণজাগরণ আমাদের দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সূচনা করেছে। ... আমাদের দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন আয়োজন করে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিকাশও আমাদের অঙ্গীকার।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী শনিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা একটি প্রজাতন্ত্র পেয়েছিলাম। তবে সেটি জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় গণজাগরণ ঘটেছে। এখন বাংলাদেশ এক বড় পরিবর্তনের দ্বারপ্রান্তে। তাই বর্তমান সংবিধান বাতিল করে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যা হবে আমাদের দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র।’
দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘এই ভূখণ্ডের জনগণের সকল সংগ্রামের সারসংক্ষেপ হিসেবে আমরা সংবিধান ও রাষ্ট্র পুনর্গঠনের কথা বলছি, যা "দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র" ধারণার মূল বক্তব্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম প্রজাতন্ত্রের ভিত্তি ছিল আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ, যা স্বাধীনতা এনে দেয়। কিন্তু পরবর্তী সংবিধানে কাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে সরকার ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠেন। এই কাঠামো বারবার পরিবর্তন করা হলেও মূল সমস্যার সমাধান হয়নি। তাই সংবিধান এমনভাবে রচনা করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কোনো সরকার স্বৈরতান্ত্রিক শাসনে পরিণত হতে না পারে। এটাই আমাদের দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের লক্ষ্য।’
‘দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র’ ধারণাটি বিভিন্ন দেশের ইতিহাসে বিদ্যমান। যেমন ফ্রান্স, পোল্যান্ড, কোস্টারিকা, এমনকি কিছু দেশে ‘পঞ্চম প্রজাতন্ত্র’-এর উদাহরণও রয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে স্বৈরতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠার সব আশঙ্কার ইতি টানতে হবে। গণপরিষদ নির্বাচন আয়োজন করে নতুন সংবিধান তৈরি করাই আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য।’
thebgbd.com/NA