ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ চুক্তি স্বাক্ষরে এখনও রাজি ইউক্রেন। ব্রিটেন থেকে রোববার (২ মার্চ) এমনটাই জানিয়ে জেলেনস্কি বলেছেন, যদি আবার তাকে ডাকা হয়, তিনি যেতে প্রস্তুত। আবারও ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে প্রস্তুত, ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ সম্পদ চুক্তি স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত। কিন্তু সেই সঙ্গে শর্তও শুনিয়েছেন। জানিয়েছেন, তার কথাও শুনতে হবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের অবস্থাও বিবেচনা করতে হবে। লন্ডন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
লন্ডনে এক ঐতিহাসিক শীর্ষ সম্মেলনের পর গভীর রাতে যুক্তরাজ্যের কিছু সংবাদমাধ্যমের সাথে এক আলোচনায় তিনি বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো প্রস্তুত থাকলে টেবিলে থাকা চুক্তিটি সই হবে। অতীতে যা হয়েছে তা অব্যাহত রাখা আমাদের নীতি, আমরা গঠনমূলক। যদি আমরা খনিজ সম্পদ চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে রাজি হই, তাহলে আমরা এটি সই করতে প্রস্তুত।’
বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি জানান, চুক্তি স্বাক্ষর করতে এখনও প্রস্তুত তিনি। তবে তার আগে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তিনি একটি ‘গঠনমূলক আলোচনা’ চান। তিনি বলেন, ‘শুধু চাই, ইউক্রেনের অবস্থার কথাটাও শোনা হোক। বিবেচনা করা হোক। আমাদের বন্ধু দেশগুলি মনে রাখুক, এই যুদ্ধে মূল আগ্রাসী কারা, যুদ্ধ শুরু করেছে কারা।’
সোমবার সকালে এক্স-এ একটি ভিডিও পোস্ট করেন জেলেনস্কি। তাতে বলেছেন, ‘আমরা ইউরোপ থেকে পূর্ণ সমর্থন পেয়েছি। একটি বিষয়ে সকলেই একমত, সকলেই শান্তি চায়। সেই কারণেই আমাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দরকার। এটাই ইউরোপের অবস্থান। অবশ্যই আমরা যুক্তরাষ্ট্রকেও গুরুত্ব দিই। ওদের কাছ থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি। তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। ইউক্রেনের প্রতিরোধ পুরোটাই তার বন্ধু দেশগুলির সাহায্যের উপর নির্ভরশীল। যে সাহায্য তারা করছে ইউক্রেন এবং নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে। আমরা শান্তি চাই। বিরামহীন যুদ্ধ চাই না। নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এই শান্তির চাবিকাঠি।’
ইউক্রেনের সংঘাতের অবসান ঘটাতে সাহায্য করার লক্ষ্যে একটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত এই চুক্তিটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদ নিয়ে একটি চুক্তি সই হওয়ার কথা ছিল। তবে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত বৈঠকে তর্কে জড়ান জেলেনস্কি। ফলে সে বিষয়ের আলোচনা আর আগায়নি।
ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা করতে রোববার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের আয়োজিত এক শীর্ষ সম্মেলনে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা যোগ দেন। স্টারমার বলেন, অনেক ইউরোপীয় নেতা নিরাপত্তার জন্য আরো বেশি ব্যয় করার এবং যে কোনও যুদ্ধবিরতি রক্ষার জন্য একটি জোট গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। লন্ডন শীর্ষ সম্মেলন থেকে ফিরে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ একটি সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ফ্রান্স এবং ব্রিটেন রাশিয়ার সঙ্গে আংশিক এক মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিতে চায়।
সূত্র: এএফপি
এসজেড
