ওভাল অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার উত্তপ্ত বাদানুবাদ নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে চর্চা চলছে। এর মধ্যেই জানা গেল, ওভাল অফিসে আচরণ কেমন হওয়া উচিত তা নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আগেই সতর্ক করেন হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা।
ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের আগেই জানানো হয়, বৈঠকে মূলত খনিজ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে চান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অর্থনৈতিক অংশীদারির বিষয়টি পোক্ত হলে ধাপে ধাপে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইউক্রেনের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করা হবে। কিন্তু জেলেনস্কি তা মানেননি। শুরুতেই তিনি সাহায্য এবং যুদ্ধে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে হতাশা জানিয়েছেন। ওই বিষয়ে জোর দিয়েছেন। ফলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গিয়েছে।
জেলেনস্কিকে সিনেটরেরা পরামর্শ দেন, বৈঠকে ট্রাম্পের প্রশংসা করতে। সমঝোতার মনোভাব নিয়ে জেলেনস্কি যেন আলোচনায় বসেন, সে কথাও বলে দিয়েছিলেন তাঁরা। তা সত্ত্বেও বৈঠকে একরোখা মেজাজেই দেখা গেছে জেলেনস্কিকে। পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সঙ্গে যুদ্ধ-বিরতি নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। ফলে সে দিনের বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার দায় পুরোপুরি জেলেনস্কির উপরে চাপিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
অবশ্য ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স-সহ ইউরোপের বাকি দেশ। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে শান্তি ফেরাতে কূটনীতির উপরে ভরসা রাখছে তারা। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির খসড়া প্রস্তাব তৈরি করতে লন্ডনে বৈঠক করেছেন ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইউক্রেনের সরকাপ্রধানরা।
বাকিংহাম প্রাসাদের অদূরে ঐতিহাসিক ল্যাঙ্কেস্টার হোটেলে আয়োজিত বৈঠকে হাজির ছিলেন ইউরোপের নানা দেশের ডজন খানেক প্রতিনিধি, ন্যাটো এবং ইউরোপীয় কমিশনের সদস্যেরাও। স্টারমার জানান, খুব তাড়াতাড়ি প্রস্তাবটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পেশ করা হবে। তার মতে, ট্রাম্পও চান ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ফিরুক। সেই শান্তি বজায় রাখতে মার্কিন সাহায্য অত্যন্ত জরুরি।
ইউক্রেনের হাত শক্ত করার পাশাপাশি ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে স্টার্মার ইউরোপের দেশগুলিকে একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছেন। বৈঠকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউক্রেন, আমরা তোমার পাশে রয়েছি। তার জন্য যত দূর যেতে হয় যাব... ইউক্রেনের জন্য ভাল কিছু করতে আমাদের সকলকে এক জোট হতে হবে। ইউরোপের নিরাপত্তা তথা আমাদের যৌথ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে।’
বৈঠকে ডাউনিং স্ট্রিটে আসেন ইটালির প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্প-বন্ধু বলে পরিচিত জর্জিয়া মেলোনি। যৌথ সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সেরে নেন। পরিস্থিতি ঠিক করতে ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র জরুরি বৈঠক ডাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সেখানে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মেলোনি।
সূত্র: রয়টার্স
এসজেড