ঢাকা | বঙ্গাব্দ

রোজা রাখা অবস্থায় হেঁচকি উঠলে করণীয়

হেঁচকি সাধারণত ডায়াফ্রাগম (শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণকারী পেশি) আকস্মিক সংকুচিত হওয়ার ফলে হয়।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৬ মার্চ, ২০২৫
রোজা রাখা অবস্থায় হেঁচকি উঠলে করণীয় ফাইল ছবি

হেঁচকি একটি সাধারণ শারীরিক প্রতিক্রিয়া, যা সাধারণত স্বল্প সময়ের জন্য ঘটে এবং কোনো গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করে না। তবে রোজা রেখে হেঁচকি উঠলে এটি অনেক সময় অস্বস্তিকর হতে পারে, বিশেষ করে যদি এটি দীর্ঘসময় ধরে চলতে থাকে। এ প্রতিবেদনে রোজা অবস্থায় হেঁচকি ওঠার কারণ ও তা নিরাময়ের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।


হেঁচকি সাধারণত ডায়াফ্রাগম (শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণকারী পেশি) আকস্মিক সংকুচিত হওয়ার ফলে হয়। রোজা অবস্থায় নিম্নলিখিত কারণগুলো হেঁচকির জন্য দায়ী হতে পারে—


খালি পেটে অ্যাসিডিটি: দীর্ঘক্ষণ না খাওয়ার ফলে পাকস্থলীতে অ্যাসিড বেড়ে যেতে পারে, যা ভোগাস নার্ভকে (Vagus Nerve) উত্তেজিত করে হেঁচকির সৃষ্টি করতে পারে।


পানি ও ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি: রোজায় পানি কম খাওয়ার ফলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে, যা স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলে এবং হেঁচকির কারণ হতে পারে।


তাড়াহুড়া করে ইফতার করা: ইফতারের সময় দ্রুত খাওয়া বা কার্বনেটেড পানীয় (সোডা জাতীয়) পান করা হলে পাকস্থলীতে হঠাৎ গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে, যা হেঁচকির কারণ হতে পারে।


গরম ও শুষ্ক আবহাওয়া: বেশি গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় শ্বাসনালী শুষ্ক হয়ে যায়, যা হেঁচকির কারণ হতে পারে।


মানসিক চাপ ও উত্তেজনা: রোজা অবস্থায় দীর্ঘ সময় না খাওয়ার কারণে কিছু মানুষের মধ্যে দুশ্চিন্তা বা স্ট্রেস বাড়তে পারে, যা হেঁচকির সৃষ্টি করতে পারে।


রোজা অবস্থায় হেঁচকি থামানোর উপায়


যেহেতু রোজা রেখে পানি পান বা কিছু খাওয়া সম্ভব নয়, তাই কিছু ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করে হেঁচকি কমানোর চেষ্টা করা যেতে পারে—


১. শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করুন: গভীর শ্বাস নিয়ে কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন, তারপর ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এটি কয়েকবার করলে ডায়াফ্রাগমের অনিয়ন্ত্রিত সংকোচন কমে আসতে পারে। একটি কাগজের ব্যাগে ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া যেতে পারে (তবে এটি অতিরিক্ত না করাই ভালো)।


২. গলা এবং স্নায়ুকে প্রশমিত করুন: লম্বা শ্বাস নিয়ে গলার স্বরযন্ত্রের (larynx) নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন। স্বাভাবিক অবস্থায় গলা পরিষ্কার করতে চেষ্টা করুন বা জোরে জোরে কাশতে পারেন।


৩. শারীরিক ভঙ্গি পরিবর্তন করুন: মাথা নিচু করে কয়েক সেকেন্ড রাখুন। একপাশে শুয়ে পড়ুন বা শরীর সামান্য বাঁকিয়ে বসুন, যাতে ডায়াফ্রাগমে চাপ পড়ে এবং হেঁচকি বন্ধ হয়।


৪. মনোযোগ সরিয়ে ফেলুন: হেঁচকির ওপর বেশি মনোযোগ না দিয়ে অন্য কিছুতে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করুন। কোনো ধ্যান বা সহজ শারীরিক ব্যায়াম করতে পারেন, যা আপনাকে শান্ত করবে।



রোজা অবস্থায় হেঁচকি হওয়া একটি সাধারণ বিষয়, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বল্প সময়ে চলে যায়। শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ, শরীরের ভঙ্গি পরিবর্তন এবং স্নায়ুকে প্রশমিত করার মাধ্যমে এটি সহজেই কমানো যায়। তবে যদি এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।


আল্লাহ আমাদের রোজা সহজ করুন এবং সুস্থ রাখুন। আমিন।


thebgbd.com/NIT