নামাজ ইসলামের অন্যতম প্রধান ইবাদত এবং এটি সঠিকভাবে আদায় করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন অনুসরণ করতে হয়। নামাজ আদায়ের প্রতিটি ধাপ নিখুঁতভাবে পালন করা জরুরি। নিচে বিস্তারিতভাবে নামাজের নিয়ম তুলে ধরা হলো।
নামাজের পূর্ব প্রস্তুতি
নামাজ আদায়ের আগে কিছু শর্ত পূরণ করা আবশ্যক—
১. পবিত্রতা অর্জন: নামাজ পড়ার আগে অবশ্যই শারীরিক পবিত্রতা নিশ্চিত করতে হবে। যদি বড় ধরনের অপবিত্রতা থাকে, তাহলে গোসল করতে হবে। ছোটখাটো অপবিত্রতা থাকলে ওজু করাই যথেষ্ট।
পরিচ্ছন্ন পোশাক: শরীর ও পোশাক পবিত্র এবং পরিচ্ছন্ন হতে হবে। কাপড়ে যদি কোনো নাপাক বস্তু লেগে থাকে, তবে তা ধুয়ে ফেলা আবশ্যক।
নির্দিষ্ট সময়: পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। প্রতিটি নামাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আদায় করতে হবে।
কিবলামুখী হওয়া: নামাজ পড়ার সময় কিবলামুখী হওয়া বাধ্যতামূলক। কাবার দিকে মুখ করে দাঁড়াতে হবে।
নিয়ত করা: নামাজ শুরু করার আগে মনে মনে নির্দিষ্ট নামাজের নিয়ত করতে হয়। নিয়ত শুদ্ধ হওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ।
নামাজ আদায়ের নিয়ম
১. তাকবির দিয়ে শুরু করা: "আল্লাহু আকবর" বলে হাত তোলা হয়। এটিকে তাকবিরে তাহরিমা বলা হয়।
সানা পড়া: প্রথম রাকাতে "সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা..." ইত্যাদি দোয়া পড়া হয়।
সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা পাঠ: সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর কুরআনের যে কোনো সূরা বা কয়েকটি আয়াত পড়তে হয়।
রুকু করা: "আল্লাহু আকবর" বলে রুকুতে যেতে হয় এবং "সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম" তিনবার পড়তে হয়।
সোজা হয়ে দাঁড়ানো: রুকু থেকে উঠে "সামি’আল্লাহু লিমান হামিদাহ" বলা হয় এবং "রাব্বানা লাকা আল হামদ" বলা যায়।
সেজদা করা: "আল্লাহু আকবর" বলে সেজদায় যেতে হয় এবং "সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা" তিনবার পড়তে হয়।
দুই সেজদার মাঝে বসা: প্রথম সেজদার পর বসে কিছু সময় বিরতি নিতে হয় এবং নির্দিষ্ট দোয়া পড়া হয়।
দ্বিতীয় সেজদা: দ্বিতীয়বার সেজদায় গিয়ে আগের মতো দোয়া পড়তে হয়।
পরবর্তী রাকাত শুরু: দ্বিতীয় রাকাত শুরু হলে প্রথম রাকাতের মতো একই নিয়মে নামাজ আদায় করতে হয়।
শেষ বৈঠক: দুই বা চার রাকাত সম্পন্ন হলে শেষ বৈঠকে বসে আততাহিয়্যাত, দরুদ শরিফ ও দোয়া মাসুরা পড়তে হয়।
সালাম ফিরানো: ডান দিকে এবং বাম দিকে "আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ" বলে নামাজ শেষ করতে হয়।
বিশেষ কিছু বিষয়
নামাজের সময় ধীরস্থিরভাবে প্রতিটি রুকন পালন করা উচিত।
খুশু-খুজুর (মনোযোগ ও একাগ্রতা) সঙ্গে নামাজ আদায় করা উত্তম।
নামাজের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় কথা বলা বা অনর্থক নড়াচড়া করা ঠিক নয়।
ফরজ নামাজের পাশাপাশি সুন্নত ও নফল নামাজ আদায়ের গুরুত্ব রয়েছে।
এই নিয়মগুলো মেনে সঠিকভাবে নামাজ আদায় করলে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয় এবং আত্মার প্রশান্তি লাভ করা যায়।
thebgbd.com/NIT