১৯৮৬ সালের একটি নাবালিকা ধর্ষণ মামলায় চার দশক পর এক ব্যক্তিকে আবারও দোষী সাব্যস্ত করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, বিচারের জন্য এত দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে বলে নির্যাতিতা ও তার পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছে দেশটির শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সঞ্জয় করোলের বেঞ্চ রায়ে বলেন, ‘এটি খুবই দুঃখের বিষয়, জীবনের প্রায় চার দশক নির্যাতিতা ও তার পরিবারকে এই ভয়াবহ অধ্যায় শেষ হওয়ার অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে।’ ২০১৩ সালে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে দেয় রাজস্থান হাইকোর্ট। সেই রায় বাতিল করে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে শীর্ষ আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
১৯৮৬ সালে নির্যাতিতা নাবালিকা ছিলেন। সে সময় তাকে ধর্ষণ করেন ২১ বছর বয়সি এক তরুণ। ঘটনার পরেই অভিযোগ দায়ের করে নির্যাতিতার পরিবার। শুরু হয় মামলা। ১৯৮৭ সালের নভেম্বর মাসে একটি নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন অভিযুক্ত তরুণ। সাত বছরের কারাদণ্ডও হয় তার। এর পর বছরের পর বছর বিভিন্ন আদালতে দফায় দফায় মামলাটি চলেছে। শেষমেশ রাজস্থান হাই কোর্টের নির্দেশে খালাস পান অভিযুক্ত।
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, নির্যাতিতা, সাক্ষী ও কৌঁসুলিদের বয়ানে জোরালো প্রমাণের অভাবের তাকে খালাস দেওয়া হচ্ছে। সে নিয়ে হাইকোর্টকে তিরষ্কার করেছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ‘নির্যাতিতা সে সময়ে দোষীর বিরুদ্ধে অপরাধ সম্পর্কে স্পষ্ট জবানবন্দি দেননি। ঘটনা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি চুপ থেকে কেঁদেছেন। কিন্তু শুধু এরই ভিত্তিতে অভিযুক্তের সপক্ষে যুক্তি দাঁড় করা যায় না। ঘটনার সময় নির্যাতিতা নাবালিকা ছিলেন। স্বভাবতই এমন ঘটনায় এক শিশু মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়বে। তার নীরবতা ছিল সেই ভয়ানক স্মৃতিরই নামান্তর। এই নীরবতাকে পরিস্থিতির সাপেক্ষে বিবেচনা করে দেখা উচিত ছিল।’
সুপ্রিম কোর্টের আরও যুক্তি, নির্যাতিতা নিজে না বললেও শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া যয়। নিম্ন আদালতের রায় বাতিল করার আগে সমস্ত প্রমাণ আরও এক বার মূল্যায়ন করে দেখা উচিত ছিল। বিচারপতিদের নির্দেশ, অভিযুক্তকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তবে নতুন করে কোনও সাজা হয়নি তার। নিম্ন আদালত কর্তৃক প্রদত্ত সাজাই কার্যকর থাকবে।
সূত্র: পিটিআই
এসজেড