ঢাকা | বঙ্গাব্দ

তাসনিম জারা ও ডা. জাহাঙ্গীর কবিরকে পাঠানো আইনি নোটিশ প্রত্যাহার

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আপত্তিকর তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে জনপ্রিয় চিকিৎসক ডা. জাহাঙ্গীর কবির এবং ডা. তাসনিম জারাকে পাঠানো নোটিশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ এপ্রিল, ২০২৫
তাসনিম জারা ও ডা. জাহাঙ্গীর কবিরকে পাঠানো আইনি নোটিশ প্রত্যাহার ছবি : সংগৃহীত।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আপত্তিকর তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে জনপ্রিয় চিকিৎসক ডা. জাহাঙ্গীর কবির এবং ডা. তাসনিম জারাকে পাঠানো নোটিশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ রোববার নোটিশদাতাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।


ডা. তাসনিম জারার বিরুদ্ধে নোটিশে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। তবে, সংশোধিত নোটিশে বলা হয়, অনেক খবরে বলা হয়েছে ডা. তাসনিম জারাকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়নি। ডা. তাসনিম জারার নামটি ঘটনাচক্রে রেফারেন্স হিসেবে ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের সঙ্গে এসেছে। বিষয়টিকে অনেকেই অতিরঞ্জিত করে অনলাইনে বাণিজ্য করার চেষ্টা করছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত।


নোটিশ প্রত্যাহারের বিষয়ে আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, সম্প্রতি ডা. তাসনিম জারা আমার মক্কেলদের পাঠানো লিগ্যাল নোটিশের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বক্তব্য প্রকাশ করেছেন। আমার মক্কেলরা প্রকাশিত বক্তব্যটি গুরত্বের সঙ্গে অনুধাবন করেছেন। তাসনিম জারা তরুণ এবং প্রতিশ্রুতিশীল একজন মেধাবী ডাক্তার।


তিনি তার বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেছেন, তার ছবি এবং ভিডিও ব্যবহার করে অসংখ্য ফেক ফেসবুক আইডি এবং ইউটিউব চ্যানেল খুলে অনেকেই প্রতারণা করছে যেগুলো তার নিজের ফেসবুক আইডি বা ইউটিউব চ্যানেল নয়। তিনি দায়িত্বশীল জায়গা থেকে কাজ করেন। ডা. তাসনিম জারার বক্তব্যে নোটিশ প্রেরকগণ সন্তুষ্ট হওয়ায় নোটিশে রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখিত ডা. তাসনিম জারার নামটি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একই সঙ্গে ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের নামও নোটিশে উল্লেখ থাকায় নোটিশ প্রেরকগণ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।


এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) পাঠানো নোটিশে বলা হয়, ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, লাইকিসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অশ্লীল ভিডিও ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত আপত্তিকর তথ্য প্রকাশ করে সমাজে পারিবারিক ও নৈতিক অবক্ষয় ঘটানো হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু-কিশোররা এসব কনটেন্টে আসক্ত হয়ে পড়ছে, যা তাদের মানসিক, নৈতিক ও সামাজিক বিকাশে বিরূপ প্রভাব ফেলছে বলে দাবি করা হয়েছে। নোটিশে এসব কর্মকাণ্ডকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন এবং শিশু সুরক্ষা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করা হয়।


বিশেষভাবে অভিযোগ আনা হয়েছে—ডা. জাহাঙ্গীর কবির ও ডা. তাসনিম জারা নানা সময়ে সামাজিক মাধ্যমে স্বাস্থ্যপরামর্শের নামে যৌন উত্তেজক ওষুধ, বিশেষ পণ্য এবং পরোক্ষভাবে অশ্লীলতা ও অপসংস্কৃতি ছড়াচ্ছেন। এতে সমাজে অনৈতিক বার্তা ছড়াচ্ছে এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি তৈরি হচ্ছে।


আইনি নোটিশে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তা না হলে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।


নোটিশে আরও বলা হয়েছে, এসব ভিডিও ও পণ্যের প্রচারের মাধ্যমে বিদেশি কিছু কোম্পানি এবং দেশীয় চক্র হাজার কোটি টাকা পাচার করছে।


নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্র জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।


নোটিশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে।


thebgbd.com/NA