ফরিদপুরের মধুখালীতে নিখোঁজের দুই দিন পর ফসলি জমি থেকে শেখ আল কালাম আজাদ নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের ক্ষত বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের সদস্যদের দাবি, স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে ওই শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
শেখ আল কালাম আজাদ জেলার মধুখালী উপজেলার মেগচামী ইউনিয়নের চর বামুন্দি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি চর বামুন্দি ইয়াছিন আলী দাখিল মাদ্রাসার সিনিয়র সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ জানায়, রোববার (২৭ এপ্রিল) বিকালে বাড়ি থেকে বের হন শেখ আল কালাম আজাদ। রাত হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সকলে চিন্তিত হয়ে পড়েন, মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর শুরু হয় খোঁজাখুঁজি, আত্মীয় স্বজন সহ বিভিন্ন স্থানে খুঁজে তাকে না পেয়ে মধুখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করে পরিবারের সদস্যরা।
এরপর তার মোবাইলের কললিস্টের সূত্র ধরে রাসেল নামের এক যুবককে আটক করে পুলিশ। তার দেয়া তথ্যানুসারে আজাদের দ্বিতীয় স্ত্রী মনিরাকেও আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যানুসারে মঙ্গলবার দুপুরে মধুখালী উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের কঠুরাকান্দি গ্রামের একটি ফসলি জমি থেকে আজাদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত শেখ আল কালামের আজাদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, রাসেল ও মনিরা পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তাদের পথের কাটা হয়ে দাঁড়ায় শেখ আল কালাম আজাদ। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ ফসলি জমিতে ফেলে রাখা হয়। এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।
নিহতের চাচাতো ভাই জানান, শেখ আল কালাম আজাদের দ্বিতীয় স্ত্রী মনিরা স্থানীয় রাসেল নামের এক যুবকের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ চলছিল। রোববার বিকালে ভাই বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারে আসে। এরপর আর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। সন্দেহ করে মনিরাকে আটক করে পুলিশ, এরপর তার দেওয়া তথ্যানুসারে রাসেলকে আটক করে পুলিশ। তাদের দেয়া তথ্যানুসারে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মনিরা এবং রাসেল স্বীকার করেছে তারা হত্যা করেছে।
তিনি আরও জানান, নির্মমভাবে ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানাই।
মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম নুরুজ্জামান জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িত রাসেল ও মনিরা এবং মনিরার মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তদন্ত চলছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
thebgbd.com/NIT