ঢাকা | বঙ্গাব্দ

পবিত্র রওজা শরিফ জিয়ারতের শিষ্টাচার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ৩০ এপ্রিল, ২০২৫
পবিত্র রওজা শরিফ জিয়ারতের শিষ্টাচার ফাইল ছবি

পবিত্র রওজা শরিফ (বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কবরস্থান) মদিনার আল-মসজিদ আল-নাববির ভিতরে অবস্থিত। এই স্থান মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত সম্মানিত, এবং এখানে যাওয়া একটি মহৎ ইবাদত হিসেবে বিবেচিত। রওজা শরিফ জিয়ারত করার সময় কিছু শিষ্টাচার ও নিয়মাবলি রয়েছে, যা পালন করা উচিত।


১. যথাযথ নিয়ত

রওজা শরিফের উদ্দেশ্যে যাওয়ার আগে, একান্তভাবে আল্লাহর নিকট সঠিক নিয়ত করে যেতে হবে। এটি তাওহিদের উপর দৃঢ় বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন হিসেবে হতে হবে, কারণ রওজা শরিফের উদ্দেশ্যে যাওয়া কোনো ধরনের শিরক বা অবৈধ কাজে লিপ্ত হওয়া উচিত নয়।


২. পর্দা ও শালীনতা

জিয়ারত করতে যাওয়ার সময় ভালোভাবে পর্দা পালন করা জরুরি। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য পর্দার খেয়াল রাখা গুরুত্বপূর্ণ, এবং পুরুষদেরও পর্দার শালীনতা বজায় রাখতে হবে।


৩. গম্ভীরতা ও বিনয়

রওজা শরিফে গিয়ে গম্ভীর, বিনয়ী ও নম্র মনোভাব নিয়ে থাকতে হবে। শোরগোল বা আড়ম্বরপূর্ণ কিছু না করে, শান্তিপূর্ণভাবে সেখানে প্রার্থনা করতে হবে।


৪. রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি সম্মান প্রদর্শন

রওজা শরিফে দাঁড়িয়ে, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো আবশ্যক। তাদের নাম নিয়ে অত্যধিক আওয়াজ বা বেয়াদবি পরিহার করতে হবে। সাধারণত, "আস-সালাতু ওয়াস সালামু আলাইক ইয়া রাসূলাল্লাহ" বলতে হবে, যা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে।


৫. সালাম দেওয়া

রওজা শরিফে যাওয়ার পর, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কবরের দিকে মুখ করে সালাম দিতে হবে। ঐতিহ্য অনুযায়ী, “আস-সালাতু ওয়াস সালামু আলাইকা ইয়াল হাবিব” বা "আস-সালাতু ওয়াস সালামু আলাইক ইয়া রাসূলাল্লাহ" বলা হয়।


৬. বেশি দোয়া ও ইস্তিগফার

রওজা শরিফের সামনে গিয়ে নিজের জন্য ও অন্য মুসলমানদের জন্য দোয়া করতে হবে। বিশেষ করে তওবা ও ইস্তিগফার (গুনাহ মাফ চাওয়া) করা উচিত। এখানে দোয়া বিশেষভাবে গৃহীত হয়।


৭. আত্মিক শুদ্ধতা

এখানে পৌঁছানোর পর আত্মিক শুদ্ধতা বজায় রাখতে হবে। এখানে যাওয়া কেবল বাইরের কার্যকলাপের জন্য নয়, বরং এটি এক আত্মিক সফর। মন, ভাষা ও শরীরের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য এই জিয়ারত করা উচিত।


৮. অপচয় ও অশ্লীলতা পরিহার

কোনো ধরনের অপচয় বা অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকতে হবে। এখানে কোনো ধরনের ব্যবসা বা অন্যন্য অবৈধ কাজ করা উচিত নয়। এছাড়া মানুষের প্রভাবিত করা বা তর্কবিতর্কের পরিহারও করা উচিত।


৯. রওজা শরিফের অনুগ্রহ ও সম্মান

রওজা শরিফের প্রতি সম্মান প্রদর্শন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আল্লাহর দরবারে মনপ্রাণ দিয়ে প্রার্থনা করা এবং অবিচলিত বিশ্বাস রেখে সেখানে দোয়া করা উচিত।


এভাবে শিষ্টাচার ও সঠিক পদ্ধতিতে রওজা শরিফ জিয়ারত করা আল্লাহর কাছে ভালো ও গ্রহণযোগ্য হবে।


thebgbd.com/NIT