ঢাকা | বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্র-চীন আলোচনায় ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’

এই আলোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি, যা শুধু যুক্তরাষ্ট্র-চীনের জন্যই নয়, বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্যও ইতিবাচক বার্তা বহন করে।
  • অনলাইন ডেস্ক | ১২ মে, ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্র-চীন আলোচনায় ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ চীন যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীন সোমবার ঘোষণা করতে যাচ্ছে যে, শনি ও রোববার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত রুদ্ধদ্বার বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ অর্জিত হয়েছে। জেনেভা থেকে এএফপি জানায়, জেনেভায় শনিবার ও রোববার অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি মন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার, চীনের ভাইস-প্রিমিয়ার হে লিফেং এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রতিনিধি লি চেংগাং অংশ নেন।


এটি ছিল বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত ১৪৫ শতাংশ শুল্কের প্রেক্ষিতে প্রথম মুখোমুখি আলোচনা। এতে কিছু চীনা পণ্যের ওপর মোট শুল্ক ২৪৫ শতাংশে পৌঁছায়। প্রতিশোধ হিসেবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে। এই বাণিজ্য দ্বন্দ্ব বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা জোরালো করেছে।


রোববার বৈঠক শেষে দুই পক্ষই আশাবাদী মনোভাব প্রকাশ করলেও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে চীনা প্রতিনিধিদল আজ সোমবার একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছে। চীনের হে লিফেং সাংবাদিকদের বলেন, ‘আলোচনার পরিবেশ ছিল খোলামেলা, গভীর ও গঠনমূলক। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ।’ 


চীনা প্রতিনিধি লি চেংগাং জানান, উভয় পক্ষই একটি যৌথ প্রক্রিয়া গঠনে একমত হয়েছে, যা বাণিজ্য ও বাণিজ্যিক ইস্যুতে নিয়মিত ও অনিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখবে। হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে আলোচনাকে একটি নতুন ‘বাণিজ্য চুক্তি’ হিসেবে অভিহিত করলেও এতে কোনো নির্দিষ্ট বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি।


‘মূল ব্যাপারটি লুকিয়ে আছে বিস্তারিতেই’


বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রধান এনগোজি ওকোনজো-ইউয়েলা বলেন, ‘এই আলোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি, যা শুধু যুক্তরাষ্ট্র-চীনের জন্যই নয়, বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্যও ইতিবাচক বার্তা বহন করে।’


আলোচনার আগে জেনেভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত সুইস রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে বৈঠকের স্থান নির্ধারিত হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চীনের ওপর ‘৮০ শতাংশ শুল্কই সঠিক’ বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট পরে স্পষ্ট করে জানান, যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে শুল্ক কমাবে না; চীনকেও কিছু ছাড় দিতে হবে।


এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়েন্ডি কাটলার বলেন, ‘উভয় দেশ ১৫ ঘণ্টারও বেশি সময় আলোচনা করেছে। এটি ইতিবাচক সংকেত। তবে আসল বিষয়টি লুকিয়ে আছে বিস্তারিতেই।’


এই বৈঠকটি এমন এক সময় অনুষ্ঠিত হলো যখন ট্রাম্প সম্প্রতি ব্রিটেনের সঙ্গে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণা করেন। ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে শুল্ক আরোপ শুরুর পর এটিই প্রথম চুক্তি। বিশ্বব্যাংকের সাবেক অর্থনীতিবিদ এবং বর্তমানে সিটিগ্রুপের প্রধান অর্থনীতিবিদ নাথান শিটস বলেন, ‘এটি কেবল শুরু। আলোচনার সূত্রপাত, সংলাপের শুরু। এখনই পুরো চিত্র নির্ধারণের সময় নয়।’


সূত্র: এএফপি


এসজেড